ফাওমি মুরগি কত দিনে ডিম দেয়

সূচিপত্রঃ ফাওমি মুরগি কত দিনে ডিম দেয়
- ফাওমি মুরগি কত দিনে ডিম দেয়
- ফাওমি মুরগির গড় ডিম উৎপাদনের স্থায়িত্ব
- ফাওমি মুরগির বৈশিষ্ট্য
- ফাওমি মুরগি পালনের সুবিধা
- ফাওমি মুরগির খাদ্য তালিকা
- ফাওমি মুরগির ডিমের দাম
- ফাওমি মুরগির গোস্তের দাম
- শেষ কথাঃ ফাওমি মুরগি কত দিনে ডিম দেয়
ফাওমি মুরগি কত দিনে ডিম দেয়
ফাওমি মুরগি কত দিনে ডিম দেয় এ বিষয়ে জানা থাকলে আপনি এই মুরগি পালনে উদ্যোগী হতে পারবেন। মানুষ মুরগি পালে ব্যবসা করার জন্য, শখ করে এবং বাড়িতে খাওয়ার জন্য। তাই ব্যবসার জন্য মুরগি পালতে চাইলে যে সকল মুরগি বেশি ডিম দেয় এবং ওজন বেশি হয় মূলত সে ধরনের মুরগি পালা উত্তম।
ফাওমি মুরগি ৫ মাস বয়সে ডিম পারা শুরু করে। তবে যদি সঠিক পরিচর্যা এবং খাবার পায় তাহলে সাড়ে চার মাসেও ডিম দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যখন এ মুরগি ডিম পাড়া শুরু করে প্রথমত একদিন পরপর অথবা দুইদিন পরপর ডিম দেয়। কিন্তু যখন তার বয়স সাত থেকে আট মাস হবে তখন রেগুলার বা নিয়মিত ডিম পারতে সক্ষম হয়।
ফাওমি মুরগির গড় ডিম উৎপাদনের স্থায়িত্ব
খামে মুরগির গড় ডিম উৎপাদনের স্থায়িত্ব বা সময়কাল অন্যান্য মুরগির চাইতে বেশি। তবে কিছু সময়ের, পরিবেশ পরিস্থিতির ক্ষেত্রে কম হতে পারে। তবে ফাওমি মুরগি সাধারণত ২/৩ বছর পর্যন্ত ডিম পাড়ে। একটি সুস্থ সবল ভাবি মুরগি বছরে ২৬০-২৮০ টি ডিম পাড়তে পারে। ফাওমি মুরগি ডিম দেওয়ার সময় সকালে এবং দুপুরে। ফাওমি মুরগি প্রথম এক বছর প্রায় নিয়মিত ডিম দিয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর দাম
কিন্তু দ্বিতীয় বছর থেকে ডিমের পরিমাণ কমতে থাকে। একসাথে অনেকগুলো মুরগি পারলে খাবারের ঘাটতির ফলে ডিমের পরিমাণ কমে যেতে পারে। খামারের পরিস্থিতি অনুযায়ী এবং জায়গা অনুযায়ী মুরগি পালা উচিত। অতিরিক্ত লাভের আশায় কম জায়গায় বেশি মুরগি পাললে লোকসান হতে পারে। কম মুরগি পালন করে বেশি লাভ করা সম্ভব।
ফাওমি মুরগির বৈশিষ্ট্য

আরো পড়ুনঃ সকালে খালি পেটে ত্রিফলা ভেজানো পানি খাওয়া কি ভালো
মূলত সাদা কালো কালার ই বেশি দেখা যায়। একটি পূর্ণবয়স্ক মুরগির ওজন হয়ে থাকে তাই ১ কেজি ২০০ গ্রাম এবং ১ কেজি ৫০ গ্রাম। যেগুলো মোরগ অর্থাৎ ছেলে মুরগি সেগুলোর ওজন হয়ে থাকে প্রায় দেড় থেকে ২ কেজি। সকল ধরনের খাবার খেতে এই মুরগি অভ্যস্ত তবে পুষ্টিকর খাবার নিয়মিত দিলে এ মুরগি দ্রুত বড় হয়। এ মুরগির মাথায় লালটে ঝুঁটি থাকে।
ফাওমি মুরগির ঠোট কালচে অথবা হালকা বাদামী হয়ে থাকে। পা গুলো লম্বা এবং কালচে/ ধূসর রংয়ের। লেজ উঁচু এবং অনেক সুন্দর গড়নের। খোলা মাঠে মুরগি খুব সহজেই চরে বেড়াতে পারে। গরম আবহাওয়ায় খুব সহজে মানিয়ে নিতে পারে।
ফাওমি মুরগি পালনের সুবিধা
ফাওমি মুরগি পালনের সুবিধা প্রচুর কারণ এ ধরনের মুরগি দেশি মুরগির মতই পালা যায়। এদের রোদের তাপ গরম সবকিছুই সহ্য হয়। অন্যান্য মুরগির মত এদের শীততাপ নিয়ন্ত্রিত জায়গার প্রয়োজন হয় না। এবং কম জায়গাতেই এদের পালন করা যায়। তবে এই মুরগি পালার জন্য অবশ্যই আপনাকে ছেড়ে পালন করতে হবে। আমি মুরগির খাবার-দাবার সবকিছু ঠিক রাখলে সহজেই পোষ মানানো যায়।
এ মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। তবে সঠিকভাবে নিয়ম মেনে গাম্বোরো, রানিখেত, নিউক্যাসল ভ্যাকসিন দিতে হবে। ভালোভাবে পরিচর্যা করলে বছরে ২০০ থেকে ১৫০ টি ডিম দিতে সক্ষম। ফাওমি মুরগিকে বেশি খাবার দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। অল্প খাবারে এরা জীবন ধারণ করতে পারে। এ মুরগি খুব দ্রুত বড় হয়। দেশি মুরগির চাইতে এদের গ্রোথ বেশি। এবং এ মুরগি গোস্ত বেশি হয় এবং খেতে অনেক সুস্বাদু।
ফাউমী মুরগির খাদ্য তালিকা
ফাহমি মুরগির খাদ্য তালিকা জানা থাকলে আপনি খুব সহজেই বাড়িতে ফাওমি মুরগি পালন করতে পারবেন। ভারসাম্য বজায় রেখে এবং পুষ্টিকর খাবার দিলে ফাওমি মুরগি খুব অল্প সময়ে বড় হয়ে যায়। যারা ফাওমি মুরগি পালন করতে চান তাদের সুবিধার জন্য ফাওমি মুরগির খাদ্য তালিকা নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো।
আরো পড়ুনঃ কিভাবে পেটের চর্বি কমানো যায় সহজ ১০ টি উপায়
- সদ্য ডিম থেকে ফোটা বাচ্চাকে ৭ সপ্তাহ পর্যন্ত মাশালড ডাল, সিদ্ধ ডিম, নরম ভাত এবং আরেকটি পাত্রের পানি রাখতে হবে।
- এবং ৭ সপ্তাহ পর একটু বাড়ন্ত মুরগির অর্থাৎ ৭ থেকে ১৯/২০ সপ্তাহ পর্যন্ত খাওয়ানো যাবে চালের খুদ, ভুট্টা ভাঙ্গা, গম ভাঙ্গা, গুড়া মাছ, বিভিন্ন খনিজ উপাদান ইত্যাদি।
- যখন ডিম পাড়ার মত বয়স হবে অর্থাৎ ২০/২১ সপ্তাহ পর থেকে প্রোটিন সমৃদ্ধ ফিড অর্থাৎ লেয়ার ফিড এবং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার ডিমের খোসা এবং চুন। সবুজ শাক সবজির মধ্যে কলা পাতা ছোট দুবড়া ঘাস, ছোট পালং শাক, পুঁইশাক ইত্যাদি।
ফাওমি মুরগির ডিমের দাম কত

ফাওমি মুরগির গোস্তের দাম
ফাওমি মুরগির গোস্তের দাম একটু বেশি হয়। অর্থাৎ ব্রয়লার কিংবা সোনালি মুরগির চাইতে এর দাম তুলনামূলক বেশি। বেশি হলেও এটি দেশি মুরগির মতই স্বাদ। এজন্য অনেকেই এই মুরগি খেতে পছন্দ করেন। এ মুরগি স্থানীয় বাজার কিংবা লোকাল মার্কেট থেকে ক্রয় করলে প্রতি কেজি ৩২০/৩৩০ টাকা ধরে তবে অনেক ব্যবসায়ী আছেন যারা ৩৫০ প্রতি কেজি ধরে থাকেন।
আরো পড়ুনঃ আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার সময় সম্পর্ক বিস্তারিত জানুন
অনেক ব্যবসায়িক আছে যারা বাড়িতে খামার তৈরি করে এ মুরগি বিক্রি করে থাকেন। বাজার ছাড়া বাড়িতে খামারীরা এ মুরগি একটু বেশি দামে বিক্রি করে থাকেন। কারণ বাজার থেকে তাদের খরচ বেশি হয় এবং ভালো পরিচর্যা করে থাকেন এবং মুরগিগুলো স্বাস্থ্যসম্মত হয় তাই এদের দাম প্রতি কেজি ৪০০-৪৩০/৪৫০ টাকা দরে বিক্রয় করে থাকেন।
এছাড়া অনেক জায়গায় দেখা যায় ৩৮০ করেও বিক্রয় হয়। অর্থাৎ গড় হিসাব ধরতে গেলে বিভিন্ন জায়গা বা পরিবেশ কিংবা স্থানভেদে এর দামের কম বেশি হয়ে থাকে। তাই যার যার এলাকা অনুযায়ী আপনারা এ মুরগি ক্রয় করতে পারেন। তবে ফাওমি মুরগির মধ্যে যেগুলো মোরগ সেগুলো খেতে বেশি স্বাদ। কারণ ডিম পাড়া মুরগির চাইতে মোরগের গোস্ত স্বাদ বেশি।
শেষ কথাঃ ফাওমি মুরগি কত দিনে ডিম দেয়
ফাওমি মুরগি খুবই ভালো জাতের মুরগি। আপনারা যারা উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে চান এবং বুঝতে পারছেন না কি ধরনের জিনিস নিয়ে বিজনেস আরম্ভ করবেন। তাদের জন্য আজকের পোস্টটি আশা করি খুবই গ্রহণযোগ্য হবে। কারণ যারা গ্রামে বসবাস করেন এবং ভালো পরিমাণে জায়গা আছে তারা এই ফাওমি মুরগি নিয়ে ব্যবসা আরম্ভ করতে পারেন।
কারণ এই ফাওমি মুরগি নিয়ে ব্যবসা করলে কয়েক পদ্ধতিতে ইনকাম করতে পারবেন। বিশেষ করে এই মুরগি ডিম দেওয়ার জন্য বিখ্যাত। এবং ফাওমি মুরগি কত দিনে ডিম দেয় আপনারা হয়তো বুঝতে পেরেছেন ধন্যবাদ।
টেকিসময় ডট কম ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url