গর্ভাবস্থায় কচু শাক খাওয়ার উপকারিতা ও ভিটামিন পুষ্টি উপাদান




গর্ভাবস্থায় কচু শাক খাওয়ার উপকারিতা প্রচুর। গর্ভবতী মহিলাদের লৌহের অথবা আয়রনের ঘাটতি থাকে আর এই কচু শাক আয়রনের ঘাটতি পূরণে সহায়তা করে থাকে। যা একটি গর্ভবতী মহিলার মেডিসিনের চাইতে বেশি কার্যকরী। 
গর্ভাবস্থায়-কচু-শাক-খাওয়াগর্ভাবস্থায় কচু শাক খেলে মা এবং অনাগত শিশুর শারীরিক বিকাশে সাহায্য করে থাকে। এছাড়া যেহেতু কচুশাকে অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা গর্ভবতী নারীদের রক্ত উৎপাদনে সহায়তা করে। চলুন আজকে গর্ভাবস্থায় কচু শাক খাওয়ার উপকারিতা গুলো নিয়ে আলোচনা করা যাক।

সূচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় কচুর শাক খাওয়ার উপকারিতা 

গর্ভাবস্থায় কচু শাক খাওয়ার উপকারিতা 

গর্ভাবস্থায় কচু শাক খাওয়ার উপকারিতা আমরা প্রায় সকলেই জানি। যেকোনো ধরনের শাক শরীরের জন্য ভালো। গর্ভাবস্থায় একটা মহিলার শরীরে বিভিন্ন পুষ্টির ঘাটতি থেকে থাকে। এ সকল ঘাটতি ওষুধ দ্বারা পূরণ সম্ভব নয়। তাই গর্ভাবস্থায় শাক সবজি খাওয়া শরীরের জন্য ভাল।

  • গর্ভাবস্থায় কচু শাক খেলে মহিলাদের রক্তশূন্যতা থেকে রক্ষা করা যায়। কারণ কচু শাক এ প্রচুর পরিমাণে আইরন রয়েছে। আর গর্ভাবস্থায় মহিলাদের আয়রনের ঘাটতি পূরণের জন্য কচুশাক অন্যতম উপাদান।
  • কচুশাকে ভিটামিন এ রয়েছে। আর আমরা সবাই জানি ভিটামিন এ চোখের দৃষ্টি বাড়াতে সাহায্য করে। অর্থাৎ কচু শাক গর্ভবস্থায় খেলে গর্ভবতী মা এবং শিশুর চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে। 
  • কচুশাকে ক্যালসিয়াম থাকার ফলে শিশুর হাড় গঠনে সহায়তা করবে এবং গর্ভবতী মহিলার ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ হবে। এছাড়াও ক্যালসিয়াম দাঁত এবং হাড় গঠনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। 
  • কচুশাকে এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। যা গর্ভবতী মহিলা এবং অনাগত শিশুর বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে। 
  • কচু শাক যেহেতু একটি আঁশযুক্ত খাবার যা শরীরের জন্য খুবই উপকার। কচু শাকে ফাইবার থাকার ফলে পেটের হজম জনিত বিভিন্ন সমস্যায় সহযোগিতা করে থাকে। কচু শাক খাওয়ার ফলে খাবার দ্রুত হজম হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে গর্ভবতী মহিলারা রক্ষা পায়।
  • কচু শাক খাওয়ার ফলে গর্ভবতী মায়ের বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ হয় যা অন্য কোন শাকসবজিতে হয় না।
  • অনেক গর্ভবতী মহিলা আছে যারা বাচ্চা প্রসব করার সময় রক্তের ঘাটতি দেখা যায়। রক্তের ঘাটতি পূরণ করার জন্য গর্ভাবস্থায় কচু শাক খাওয়া খুবই জরুরী।
  • কচুশাকে ভিটামিন সি এবং ফলিক অ্যাসিড থাকায় এটি বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

কচু শাক এ থাকা পুষ্টি উপাদান 

কচু শাক এ থাকা পুষ্টি উপাদান একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের এবং গর্ভবতী মহিলা উভয়ের জন্য খুবই উপকারী। কারণ কচুশাকে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদানে ভরপুর রয়েছে। কচু শাক কিন্তু কমবেশি প্রায় সকলেই খায়। তবে এতে থাকা পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। চলুন কচু শাকের কি কি পুষ্টি উপাদান রয়েছে এ নিয়ে বিস্তারিত জানানো যাক। 

আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা ও নিয়ম

  • ভিটামিন এ 
  • ভিটামিন বি ৬ 
  • ভিটামিন সি 
  • আইরন 
  • ম্যাগনেসিয়াম 
  • ক্যালসিয়াম 
  • পটাশিয়াম 
  • ফাইবার 
  • অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট 
  • ফলিক এসিড 
  • ক্যালোরি ইত্যাদি। 

কচু শাক খাওয়ার ফলে কি এলার্জি হয় 

কচু শাক খাওয়ার ফলে এলার্জি হয় কিনা যারা খেয়ে থাকেন তার অবশ্যই ভালোভাবে জানেন। কচি সব ঘর ফলে অনেকের এলার্জির সমস্যা হয় আবার অনেকের হয় না। তবে এটি বিশেষ করে নির্ভর করে রান্নার উপর। কারণ সঠিক ভাবে রান্না না করতে পারলে অনেক ক্ষেত্রে এলার্জি সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেহেতু কচুশাকে অক্সালেট থাকে তাই এটি খাওয়ার ফলে গলা, হাত চুলকায়।

  • কচু শাকের ক্যালসিয়াম অক্সালেট থাকার ফলে এটি খাওয়ার সময় কিছুটা চুলকায়। ভালোভাবে সেদ্ধ না হলে এবং রান্নায় কোন ঘাটতি থাকলে এটি খেলে অনেক ক্ষেত্রে চুলকায়।
  • এছাড়া কচু শাক রান্না করার সময় হাত দিয়ে স্পর্শ করলে ত্বক অনেক সময় চুলকায়। কারণ এতে কিছু আঠালো পদার্থ থাকে। 
  • তবে খাওয়ার সময় অথবা স্পর্শ করার সময় যে পরিমাণে চুলকায় এটি সাময়িক, দীর্ঘস্থায়ী বা ক্ষতিকর নয়। 
  • এছাড়াও অনেকের শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেমের উপর নির্ভর করে। কারণ যাদের ইমিউনিটি সিস্টেম একটু দুর্বল এবং এলার্জিজনিত সমস্যা আছে তাদের বেশি সমস্যা হতে পারে যেমন ত্বকে ফুসকুড়ি কিংবা ফুলে ওঠা ইত্যাদি।
  • তবে অনেকেই আছে যাদের খাওয়ার এবং স্পর্শ করার ফলে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায় না।

গর্ভাবস্থায় কচুর লতি খাওয়া যাবে কি 

গর্ভাবস্থায় কচুর লতি খাওয়া যাবে কি না এ সম্পর্কে অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন। তবে অবশ্যই গর্ভাবস্থায় কচুর লতি খাওয়া যাবে। কচুর শাক খাওয়া যেমন উপকার তেমনি কচুর লতি খাওয়া উপকার। কারণ কচুর নদীতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে যা দেহের রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। কচুর লতি ফাইবার যুক্ত একটি সবজি। 

আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খাওয়ার উপকারিতা ও কিছু সতর্কতা 

  • ফাইবার যুক্ত যে কোন সবজি বা খাবার খাওয়া শরীরের জন্য উপকার। কচু লতিতে যেহেতু ফাইবার রয়েছে তাই এটি খেলে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কম।
  • হিমোগ্লোবিন বাড়াতে কচুর লতি খুবই উপকার। গর্ভবতী মহিলাদের রক্তের ঘাটতি থাকাই কচুর লতি সেই ঘাটতি পূরণে সহযোগিতা করে থাকে।
  • এছাড়া কচুর লতিতে বিভিন্ন খনিজ, ভিটামিন, মিনারেল, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম রয়েছে যা গর্ভবতী মহিলার এবং তার বাচ্চার হাড় দাঁত গঠনে সহায়তা করে থাকে।
  • এছাড়াও ফাইবার থাকার ফলে দ্রুত খাবার হজমের সহায়তা করে থাকে। 
  • কচুর লতিতে কম ক্যালরি থাকার ফলে এটি ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে। 
  • তাই গর্ভাবস্থায় কচুর শাক খাওয়ার উপকারিতা যেমন রয়েছে প্রচুর লতি খাওয়ার উপকারিতা ও রয়েছে। 

গর্ভাবস্থায় কচু শাক খাওয়ার পরিমাণ 

গর্ভাবস্থায় কচু শাক খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে তবে অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া যাবে না এবং রান্না স্বাস্থ্যসম্মত হতে হবে। কচুশাকে যে সকল ভিটামিন বা ক্যালসিয়াম রয়েছে সেগুলো উপকারী হলেও অনেক ক্ষেত্রে ক্যালসিয়াম অক্সালেট থাকার ফলে মাঝে মাঝে খাওয়ার পর সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে চলুন গর্ভাবস্থায় কি পরিমান কচু শাক খাওয়া যায়। 
গর্ভাবস্থায়-কচু-শাক-খাওয়াগর্ভাবস্থায় সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন কচু শাক খাওয়া ভালো। তবে এর অতিরিক্ত খাওয়া উচিত নয়। অর্থাৎ রান্না করা এক কাপ কচু শাক খেলেই যথেষ্ট হবে একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য। এছাড়া অনেকের কচু শাক খেলে গ্যাস্টিকের সমস্যা হয়। তাই পরিমাণে কম খাওয়াই ভালো। যাদের গ্যাসের সমস্যা বেশি তারা সপ্তাহে ১-২ দিন খেতে পারেন। 

তবে অনেক গর্ভবতী মহিলাদের কিডনি, এলার্জি, হরমোনাল বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থাকতে পারে। আবার এমনও আছে যাদের অতিরিক্ত গ্যাস, কোন কিছুই খাওয়া সহ্য হয় না তারা পরিমিত পরিমাণে খাবেন। খেতে যদিও ভালো লাগে তারপরও কম খাওয়ার চেষ্টা করবেন। এবং এ ধরনের সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খেতে পারেন।

কচু শাকের উপকারিতা

কচু শাকের উপকারিতা প্রচুর। কচু শাক আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। ছোট, বড় সকলের জন্য কচু শাক খাওয়া প্রয়োজন। কারণ আমরা ছোট থেকে জেনে এসেছি শাক খেলে চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায়। তবে কথাটা সত্যি। কচি শাকের উপকারিতা গুলো কি কি আলোচনা করা যাক। 

ভিটামিন এঃ কচু শাকের যেহেতু ভিটামিন এ রয়েছে ফলে এটি শিশুর এবং বড়দের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এবং বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দ্রুত বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। কচু শাক খেলে অনেক সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায় ও ত্বকের স্বাস্থ্য উজ্জ্বল করে। 

আয়রঃ এছাড়া কচু শাকের আরো উপকারিতা রয়েছে। এরমধ্যে আরেকটি হচ্ছে আয়রন। কচুশাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে। যা দেহের রক্তশূন্যতা হ্রাস করতে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের এবং শিশুর উভয়ের আয়রন অত্যন্ত জরুরী। আয়রন থাকার ফলে রক্ত বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করে। 

ক্যালসিয়ামঃ এছাড়াও কচুশাকে ক্যালসিয়াম থাকার ফলে এটি হার মজবুত করতে সাহায্য করে। তাই গর্ভবতী মহিলা সহ, ছোট, বড় সকলের কচু শাক খাওয়া দরকার। পেশির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। 

পটাশিয়ামঃ কচু শাকের আরেকটি উপাদান পটাশিয়াম। যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা করে এবং হার্টের কার্যক্ষমতা উন্নত রাখে।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্টঃ কচুশাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হয়েছে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার ফলে এই শাক খেলে শরীরের ইমিউনিটি বৃদ্ধি পায়। এবং খুব সহজেই রোগ বালাই থেকে দ্রুত রক্ষা পাওয়া যায়। এবং শরীরকে রক্ষা করে থাকে ফ্রি রেডিক্যাল নামক ক্ষতি থেকে। 

আরো পড়ুনঃ প্রতিদিন কয়টা আমলকি খাওয়া উচিত

ফাইবারঃ ফাইবার আরেকটি উপাদান যা কচুশাকে রয়েছে। কচু শাকের ফাইবার থাকার ফলে গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত রোগ থেকে দ্রুত রক্ষা পাওয়া যায়। এছাড়া করা অবস্থায় খাবার হজম একটি গুরুত্বপূর্ণ সাইড। হজম শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য কোচের শাক খাওয়া প্রয়োজন। কচু শাক খেলে অন্ত্রের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকে সমাধান পাওয়া যায়। 

সঠিক পদ্ধতিতে কচু শাক রান্না 

সঠিক পদ্ধতিতে কচু শাক রান্না করলে এতে থাকা অক্সালেটের পরিমাণ অনেকটাই কমে যাবে। হলে গর্ভবতী মহিলা থেকে শুরু করে ছোট বাচ্চারা খেতে কোন সমস্যা হবে না। চলুন কিভাবে সঠিক উপায়ে কচু শাক রান্না করে খেলে সব ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা পাওয়া যায় সে নিয়ে আলোচনা করা যাক।
গর্ভাবস্থায়-কচু-শাক-খাওয়া

  • যদি কচুশাক ডাটাসহ রান্না করতে চান তাহলে ডাটা গুলো শাক থেকে আলাদা করে নিতে হবে। এবং ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। 
  • দুই তিনবার পানি পরিবর্তন করে ধুয়ে নিতে পারেন। 
  • কচুশাক ধুয়ার সময় পানিতে সামান্য লবণ এবং সামান্য ভিনেগার ব্যবহার করলে এতে থাকা জীবাণু এবং ধুলা- ময়লা সহজেই দূর হয়ে যাবে।
  • কচু শাকের অক্সালেট কমানোর জন্য রান্নার আগে ৫-১০ মিনিট লবণ পানিতে ভিজিয়ে রেখে তারপর সিদ্ধ করতে দেন। এ পদ্ধতি ব্যবহার করলে অক্সালেট অনেক কমে যাবে।
  • সিদ্ধ করার সময় এর সাথে সামান্য পরিমাণ তেতুল অথবা টক কোনো আচার যুক্ত করতে পারেন এতেও অক্সালেট অনেকটা কমে যাবে। অর্থাৎ হাত গলা মুখ চুলকানো কমে যাবে।
  • সেদ্ধ করার পরে শাক থেকে যে পানি বের হয় সেটি ছেঁকে ফেলে দিন। 
  • এরপর একটি পাত্রে পরিমাণ মতো সরিষার বা সয়াবিন তেল গরম করে এর ভেতরে পেঁয়াজ কুচি, রসুন কুচি, শুকনা মরিচ, অথবা কাঁচামরিচ স্বাদমতো, হলুদ গুঁড়ো মরিচ গুঁড়ো, লবণ স্বাদমতো দিন। 
  • এরপর সকল মসলা হালকা ভাজা হলে সিদ্ধ করা শাক দিয়ে ভালোভাবে নাড়াচাড়া করে ৭-৮ মিনিট ঢেকে রেখে দিন। 
  • এরপর খাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে গেলে নামিয়ে কোন পাটে ঢেলে রাখুন। 
  • এভাবে কচুশাক রান্না করলে গলা গলা হাত মুখ চুলকানো অনেকটাই কমে যাবে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সমস্যা না হতে পারে। এরপরও যদি চুলকায় তাহলে বুঝতে হবে তার এলার্জি জনিত সমস্যা আছে।

কচু শাক খাওয়ার অপকারিতা 

কচু শাক খাওয়ার অপকারিতা ও রয়েছে। কারণ প্রত্যেকটা জিনিসের ভালো এবং মন্দ দুটোই রয়েছে। কচু শাক খাওয়ার যেমন উপকারিতা রয়েছে তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে অপকারিতা রয়েছে। তবে চলুন কি কি ক্ষতিকর দিকগুলো রয়েছে সেগুলো আলোচনা করা যাক। ক্ষতিকর দিকগুলো জানলে অনেকেই এটি খাওয়া থেকে সাবধানতা অর্জন করতে পারবেন। 

কিডনির সমস্যাঃ অনেকেই আছেন কিডনি সমস্যায় ভুগে থাকেন। যাদের কিডনিতে পাথর আছে অর্থাৎ কিনিতে পাথর জনিত সমস্যায় ভুগছেন তারা কচু শাক খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ এতে থাকা আইরন কিডনিতে পাথর জমাতে সাহায্য করে।

গলায় জ্বালাপোড়া বা চুলকানোঃ কচুশাকে ক্যালসিয়াম অক্সিজেনের থাকার ফলে এটি খাওয়ার ফলে গলা চুলকায় তে এবং জ্বালাপোড়া করতে পারে। এর কারণ হতে পারে সঠিকভাবে রান্নার অভাব অথবা সেদ্ধ কম হলে।

হজম জনিত সমস্যাঃ কচুশাকে অক্সালেট থাকার ফলে অনেক ক্ষেত্রে এটি খাওয়ার পরে পেট ফাঁপা, হজমে সমস্যা, গ্যাসের সমস্যা দেখা দেয়। তাই অতিরিক্ত খাওয়া থেকে নিজেকে সচেতন থাকতে হবে। 

এলার্জি সমস্যাঃ অনেকেই আছেন যাদের বিভিন্ন খাবারে এলার্জি হতে পারে। তাই যারা অতিরিক্ত অ্যালার্জি সমস্যায় ভুগছেন তারা খোঁচা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। কারণ এতে অক্সালেটের পরিমাণ বেশি তাই এটি খাওয়ার ফলে ত্বক ফুলে যেতে পারে এবং ত্বকে এলার্জি বের হতে পারে।

গর্ভবতী নারীদের জন্যঃ যারা গর্ভবতী নারীরা রয়েছেন তারা অতিরিক্ত পরিমাণ পরিমাণে খাবেন না। কারণ অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে শরীর চুলকাতে পারে এবং হজমে ব্যাঘাত করতে পারে। এছাড়া সঠিকভাবে রান্না যদি না হয় তাহলে মা এবং অনাগত শিশুর ও উভয়েরই ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

শেষ কথাঃ গর্ভাবস্থায় কচু শাক খাওয়ার উপকারিতা 

কচু শাক খাওয়া অবশ্যই ভালো। কারণ প্রাকৃতিক ভাবে যেহেতু এই শাক সংগ্রহ করা যায় এবং মানসম্মতভাবে রান্না করলে এটি গর্ভবতী মহিলা এবং শিশুর জন্য খুবই উপকারী দিবে। যেহেতু কচুশাকে আয়রন এবং অক্সাইড এর পরিমাণ বেশি তাই যে সকল গর্ভবতী মহিলাদের এলার্জিজনিত সমস্যা আছে তারা অবশ্যই ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

গর্ভাবস্থায় অনেক কিছু নিয়ম মেনে খেতে হয়। নিয়মের বাইরে খেলে অনেক সময় বাচ্চার এবং গর্ভবতী মহিলার দুজনেরই সমস্যা হতে পারে। অবশেষে বলা যায় কচু শাক একটি স্বাস্থ্যকর খাবার যা ভিটামিন এ এর ঘাটতি পূরণ করে থাকে এবং চোখের দৃষ্টি উন্নত করতে সাহায্য করে। গর্ভবতী মায়ের খাবারের আরও  টিপস পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

টেকিসময় ডট কম ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url