বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার নিয়ম এবং খরচ কত

২০২৫ সালে জানুয়ারি মাস থেকে বাংলাদেশ থেকে ইউরোপের দেশ পোল্যান্ড যাওয়ার ভিসা অনুমোদন দিয়েছেন। তাই যারা বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যেতে চান তারা এ ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নির্দিষ্ট একটি ভিসা সংগ্রহ করে যেতে পারেন। 
বাংলাদেশ-থেকে-পোল্যান্ড-যাওয়াবাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার বিভিন্ন ভিসা  রয়েছে। যেমন ভিজিট ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট ভিসা এবং স্টুডেন্ট ভিসা ইত্যাদি। এগুলোর মধ্যে আপনি যেকোন একটি পছন্দ করে পোল্যান্ড যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে পারেন।

পোষ্ট সূচিপত্রঃ বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার নিয়ম ও খরচ 

বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার নিয়ম 

বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার নিয়ম রয়েছে। যারা প্রবাসে যেতে চান এবং সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে চান অথবা কাজের জন্য যেতে চান তারা নিচে উল্লেখিত ভিসার ধরন গুলো অবলম্বন করতে পারেন।

ভিসা ধরন এবং যোগ্যতা নির্ধারণ করা 

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করা 

ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া 

বিভিন্ন ভিসার খরচ 

পোল্যান্ড কোন কাজের চাহিদা বেশি 

পোল্যান্ড কোন কাজের বেতন কত 

বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার সকল নিয়ম উপরে উল্লেখ করা হলো এবার বিস্তারিত আপনাদের নিয়ম গুলো জানানোর চেষ্টা করব। 

ভিসার ধরন এবং যোগ্যতা নির্ধারণ করা 

ভিসার ধরণ ও যোগ্যতা নির্ভর করবে সম্পূর্ণটাই নিজের উপর। অর্থাৎ আপনার যদি ভবিষ্যৎ ড্রিম হয়ে থাকে ইউরোপ যাওয়ার তাহলে আপনাকে নির্ধারণ করতে হবে আপনি কোন ধরনের ভিসায় যেতে চান। কোন ভিসা আপনার জন্য প্রযোজ্য সেটা আপনার যোগ্যতা এবং ইচ্ছার উপরে নির্ভর করবে। নিজের যোগ্যতা বলতে আসলে আপনি কোন ধরনের কাজে দক্ষ সে সকল বিষয়ের উপর নির্ভর করবে।

আরো পড়ুনঃ দক্ষিণ কোরিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ধরন ও কাজের বেতন কত

পোল্যান্ড ইউরোপের মধ্যে উন্নত একটি দেশ। পোল্যান্ড সেনজেন ভুক্ত দেশ। ভ্রমণের নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য এবং আপনার চাহিদা অনুযায়ী ভিসার নির্বাচন করে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। তবে পোল্যান্ড অনেক কয়েকটি ভিসায় যাওয়া যায় চলুন সেগুলো কি কি জেনে নেয়া যাক। 

বাংলাদেশ-থেকে-পোল্যান্ড-যাওয়াসেনজেন ভিসা, ব্যবসায়িক, পারিবারিক, বন্ধুবান্ধবের সাথে দেখা এবং ট্যুরিজম।
  • ওয়ার্ক পারমিট ভিসা 
  • স্টুডেন্ট ভিসা 
  • ডি টাইপ ন্যাশনাল ভিসা
  • বিজনেস ভিসা 
  • ট্রানজিট ভিসা 
  • ইইউ ব্লু কার্ড ভিসা 
  • মানবিক বা শরণার্থী ভিসা

ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র 

দেশের বাইরে বাংলাদেশ থেকে যেকোন দেশে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু কাগজপত্র লাগে। সঠিক কাগজপত্র ঠিকঠাক না থাকলে দেশের বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক সমস্যায় পড়তে হয় তাই আপনারা সঠিক কাগজপত্র তৈরি করে তারপরে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। চলুন বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার নিয়ম, কি কি কাগজপত্র লাগে সেগুলো জানা যাক।

আরো পড়ুনঃ হাঙ্গেরি ওয়ার্ক পারমিট ভিসার খরচ কত বিস্তারিত জানুন

  • একটি অরিজিনাল পাসপোর্ট ছয় মাস মেয়াদী হতে হবে। 
  • পূরণকৃত আবেদন ফরম। 
  • টাকা জমা দেওয়ার রশিদ 
  • সম্প্রতি তোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি। 
  • ভ্রমণের উদ্দেশ্য প্রমাণপত্র। 
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট নূন্যতম ৬ মাসের। 
  • বিমানের টিকিট বুকিং এর প্রমাণ। 
  • ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য কাজের অভিজ্ঞতার প্রমাণপত্র।
  • কাজের অফার লেটার ওয়ার্ক পারমিট এর জন্য। 
  • পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট। 
  • মেডিকেল সার্টিফিকেট। করার সার্টিফিকেট সমূহ। 

ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া 

ইউরোপের দেশগুলোতে যেতে হলে অবশ্যই আপনাকে ভিসা আবেদন করার জন্য কিছু প্রক্রিয়া রয়েছে সেগুলো সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে। প্রক্রিয়াগুলো হল। ভিসা আবেদন করার জন্য অনলাইনে দূতাবাসে এপয়েন্টমেন্ট বুক করতে হবে। ভিসা প্রক্রিয়া করার জন্য একটি ফি আছে সেই ফি পূরণ করতে হবে। নির্দিষ্ট কাগজপত্র ভিসা প্রসেসিং এর সময় দূতাবাসে জমা দিতে হবে। বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান করতে হবে অর্থাৎ আঙ্গুলের ছাপ ও মুখের ছবি প্রদান করতে হবে।

পোল্যান্ডে বিভিন্ন ভিসার খরচ 

পোল্যান্ড যাওয়ার বিভিন্ন ভিসা রয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন ভিসায় ভিন্ন ভিন্ন খরচ হয়। কারণ ভিসা অনুযায়ী খরচ নির্ভর করে। এছাড়াও বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার নিয়ম ও আনুষঙ্গিক অনেক বিষয় রয়েছে যেগুলো একটি ভিসা প্রসেসিং এর জন্য প্রয়োজন। চলুন কোন ভিসায় আনুমানিক মোট কত টাকা লাগে আলোচনা করা যাক।

ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় খরচ হয়ে থাকে ৪-৫ লক্ষ টাকা।

স্টুডেন্ট ভিসায় সকল খরচ সহ মোট খরচ লাগে ৩-৪ লক্ষ টাকা। 

টুরিস্ট ভিসায় খরচ লাগে এক থেকে দেড় লক্ষ টাকা।

পোল্যান্ডে কোন কাজের চাহিদা বেশি 


নির্মাণ বা কনস্ট্রাকশন কাজের ক্ষেত্রে 

  • রংমিস্ত্রি বা painter 
  • Plumber 
  • ওয়েলদার 
  • কাঠ মিস্ত্রি বা carpenter 
  • ইলেকট্রিশিয়ান 
  • ইট সুরক্ষার মিস্ত্রি বা bricklayer

কারখানায় কাজের ক্ষেত্রে 

  • ফুট প্রসেসিং কর্মী 
  • মেশিন অপারেটর 
  • প্যাকেজিং ও লেবেলিং কর্মী 
  • গার্মেন্টস কর্মী 

কৃষি কাজের ক্ষেত্রে 

আরো পড়ুনঃ ক্রোয়েশিয়া ভিসার দাম কত ও কোন কাজের চাহিদা বেশি

  • ফুল চাষ 
  • ফল ও সবজি চাষ 
  • গবাদি পশু পালন 
  • ডেইরি খামার 

কাপড়ের গুদামে কাজের ক্ষেত্রে 

  • ডেলিভারি কর্মী 
  • লোডিং শ্রমিক 
  • ওয়ার হাউস কর্মী 
  • লেবেল বা ট্যাগ লাগানো কর্মী 

হোটেল অথবা রেস্টুরেন্টে কাজের ক্ষেত্রে 
বাংলাদেশ-থেকে-পোল্যান্ড-যাওয়া

  • রান্না সহকারি 
  • ওয়েটার 
  • হোটেল ক্লিনার 
  • বারিস্তা বা কফি প্রস্তুত কারক 

স্বাস্থ্য সেবা ক্ষেত্রে 

  • নার্স 
  • কেয়ার গিভার 
  • হাসপাতালের পরিছন্নতা কর্মী 
  • রিসিপশনিস্ট 

ড্রাইভিং এর ক্ষেত্রে কাজ 

  • ট্রাক ড্রাইভার 
  • পার্সোনাল কার ড্রাইভার 
  • বাস ড্রাইভার 
  • ট্যাক্সি ড্রাইভার ইত্যাদি 

পোল্যান্ডে কোন কাজের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বেতন কত 

পোল্যান্ডে কাজের ধরন দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার ওপর বেতন নির্ভর করে এছাড়াও অনেক ক্ষেত্রে কোম্পানির উপর নির্ভর করে থাকে। কারণ কোম্পানি কাজের সঠিকতা যাচাই করার পর বেতন দিয়ে থাকে। পোল্যান্ডে সর্বোচ্চ বেতন প্রায় ২ লক্ষ টাকার মতো। এবং সর্বনিম্ন বেতন ৪০ হাজার টাকা। পোল্যান্ডে প্রতি ঘন্টায় বেতন প্রায় ৮০০ টাকা।

নির্মাণ শ্রমিকের কাজের বেতন ১ লক্ষ ২০ হাজার থেকে এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা। 

কারখানা শ্রমিকের ও রেস্টুরেন্ট কর্মীদের জন্য বেতন ১ লক্ষ ১০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা। 

কৃষি শ্রমিকের বেতন ১ লক্ষ থেকে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা। 

ক্লিনারের বেতন এক লক্ষ থেকে এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা।

ওয়েল্ডারদের বেতন ১ লক্ষ ৭০ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকা। 

ইলেকট্রিশিয়ানের বেতন এক লক্ষ 50 হাজার থেকে 2 লক্ষ 10 হাজার। 

প্লাম্বারের বেতন ১ লক্ষ ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা। 

শেষ কথাঃ বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার নিয়ম 

পোল্যান্ডে বিভিন্ন ধরনের কাজ রয়েছে আপনি এর মধ্যে কোন একটি অভিজ্ঞতা অর্জন করে গেলে খুব সহজেই জবের সম্ভাবনা থাকে। বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার নিয়ম জেনে আপনি যদি কোন অভিজ্ঞতা ছাড়াই জান তাহলে বিভিন্ন ধরনের কাজ আছে যেগুলো করতে পারেন তবে অবশ্যই ভিসার সময় আপনাকে এজেন্সিদের সাথে কথা বলে এবং চুক্তি করে যেতে হবে তারাই ঠিক করে দেবেন কোন কাজের জন্য আপনাকে নির্ধারণ করা হবে। 

এছাড়াও অনেক এজেন্সি আছে যারা সেখানে নিয়ে গিয়ে তারপরে কিছুদিন যাওয়ার পর কাজের ব্যবস্থা করে দেন। অনেক ভুয়া এজেন্সি আছে যারা প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে যায় কিন্তু পরবর্তীতে কাজের ব্যবস্থা করে দেয় না তখন বিভ্রান্তিতে পড়তে হয় তাই সকল কিছু ভালোভাবে জেনে তারপরে যাওয়ার চেষ্টা করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

টেকিসময় ডট কম ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url