গর্ভাবস্থায় জলপাইয়ের ২০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা পুষ্টি উপাদান বিশ্লেষণ

সূচীপত্রঃ গর্ভাবস্থায় জলপাইয়ের ২০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় জলপাইয়ের ২০ স্বাস্থ্য উপকারিতা
- একটি জলপাই এ কি পরিমাণ পুষ্টি উপাদান রয়েছে
- গর্ভাবস্থায় কয়টি জলপাই খাওয়া উচিত
- ১০০ গ্রাম জলপাইয়ের পুষ্টি উপাদান সমূহ
- জলপাই খাওয়ার সতর্কতা
- জলপাইয়ের তেলে স্বাস্থ্য উপকারিতা
- শিশুদের জলপাই খাওয়ার উপকারিতা
- ছেলেদের জলপাই খাওয়ার উপকারিতা ও পরিমাণ
- জলপাইয়ের পাতার গুণাবলী ও ব্যবহার
- শেষ কথাঃ গর্ভাবস্থায় জলপাইয়ের স্বাস্থ্য উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় জলপাইয়ের ২০ স্বাস্থ্য উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় মেয়েদের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল সময়।
গর্ভাবস্থায় খাদ্য তালিকায় এমন কিছু খাবার রাখা উচিত যা গর্ভবতী মহিলা
এবং তার শিশুর জন্য উপকার হয়। জলপাই ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ একটি
ফল যা গর্ভবতী নারীর উপকার করে এবং শিশুর স্বাভাবিক বিকাশের সহায়তা করে
থাকে। গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়ার উপকারিতা গুলো নিম্নে আলোচনা করা যাক।
শক্তি সরবরাহ করে
গর্ভাবস্থায় নারীদের শরীরে শক্তি সরবরাহের জন্য বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর
খাবার খাওয়া অত্যন্ত জরুরী। এমন অনেক ফল বা খাবার আছে যেগুলো খেলে শরীরের শক্তি
বৃদ্ধি করে। তেমনি একটি ফল জলপাই থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট শরীরে শক্তি সরবরাহ করতে
সাহায্য করে।
হৃদযন্ত্রের সুরক্ষা
জলপাই চর্বি জমা বাধতে রোধ করে এবং হার্ট অ্যাটাক এর ঝুঁকি কমায় এছাড়াও জলপাই খারাপ কোলেস্টেরল হ্রাস করে এবং ভালো কোলেস্টেরল বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
এন্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ
মানুষের দেহে বিভিন্ন ধরনের কোষ রয়েছে। কোষ সুরক্ষা রাখা অত্যন্ত জরুরী। জলপাই যেহেতু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা শরীরের কোষের সুরক্ষা রাখতে সাহায্য করে এবং ফ্রি রেডিক্যাল থেকে সুরক্ষিত রাখে।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কচু শাক খাওয়ার উপকারিতা ও ভিটামিন পুষ্টি উপাদান
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে
গর্ভাবস্থায় নারীদের হরমোনের বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটে ফলে ত্বকের অনেক দাগ বা ব্রণ দেখা যায়। তাই এ সময় ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল খাওয়া উচিত ত্বকের সুরক্ষার জন্য জলপাই খেলে ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধি পায়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে
জলপাই থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান যা শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেমকে উন্নত করতে সাহায্য করে ফলে বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে
গর্ভাবস্থায় নারীদের অনেক ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয় তাই এ সময় খাওয়ার তালিকা উত্তম রাখা যথেষ্ট। জলপাই ভিটামিন এ সমৃদ্ধ একটি ফল যা গর্ভবতী নারীদের জন্য ভালো। জলপাই ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে ।
ভ্রুনের মস্তিষ্কের বিকাশ
গর্ভাবস্থায় একটা নারী জলপাই খেলে শিশুর ভ্রুনের মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে কারণ জলপাই তে রয়েছে ওমেগা-৩, ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড।
হাড় গঠনে সহায়তা
গর্ভাবস্থায় নারীদের এমন কিছু খাওয়া উচিত যা শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ এবং হাড় গঠনে সহায়তা করে। তাই গর্ব অবস্থায় জলপাই খেলে শিশুর হাড় গঠনে সহায়তা করে কারণ জলপাইতে রয়েছে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ
রক্তচাপ মানুষের মস্তিষ্কের অনেক ক্ষতি করে। এছাড়া গর্ভাবস্থায় প্রত্যেকটি নারী অনেক টেনশন এ থাকেন ফলে রক্তচাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এ ধরনের ক্ষতি এড়াতে গর্ভবতী নারীরা জলপাই খেতে পারেন।।
কোষ্ঠকাঠিন্য
গর্ভাবস্থায় সবচাইতে বড় সমস্যা হচ্ছে কোষ্ঠকাঠিন্য। এ সময় খাওয়ার বিভিন্ন অনিয়মের ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের দেখা দেয় যা একটি গর্ভবতী নারীর জন্য খুবই বিপদজনক। জলপাই যেহেতু আশ যুক্ত একটি খাবার এবং প্রচুর ফাইবার রয়েছে যা গর্ভবতী নারীদের জন্য উপকারী।
রক্তশূন্যতা
গর্ভাবস্থায় অনেক নারীরা খাবার ঠিকমতো খেতে পারে না তাদের রুচিতে অনেক ব্যাঘাত ঘটে থাকে ফলে তাদের শরীরে রক্তের পরিমাণ কমে। তাই রক্তের পরিমাণ বাড়াতে বা হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি করতে জলপাই খাওয়া উচিত এটি রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে।
স্নায়ুতন্ত্রের সুরক্ষা
জলপাই রয়েছে পলিফেনাল যা অতিরিক্ত মানুষের চাপ এবং স্নায়ুতন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে। গর্ভবতী নারীরা যেহেতু একটু মানুষের চাপে থাকেন তাদের এ ধরনের মানসিক চাপ কমানোর জন্য জলপাই খাওয়া উচিত।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে
গর্ভাবস্থায় একটি নারীর জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা সময় এ সময় অনেক সাবধানতা অর্জন করে চলাফেরা করতে হয়। এবং খাওয়ার কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। গরম অবস্থায় অনেক মহিলাদের ডায়াবেটিকস দেখা যায় যা মা এবং শিশুর জন্য খুবই ক্ষতিকর। জলপাই অতিরিক্ত সুগার কমাতে সাহায্য করে ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে।
ভিটামিন এ
জলপাই ফাইবার যুক্ত একটি খাবার এবং এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ রয়েছে যা একটি গর্ভবতী মহিলার স্বাস্থ্যের জন্য উপকার। গর্ভাবস্থায় জলপাই খেলে গর্ভস্থ শিশুর চোখের স্বাভাবিক গঠনে সহায়তা করে।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করা
জলপাইয়ে রয়েছে এক ধরনের ফ্যাট যা খারাপ কোলেস্টেরল দূর করতে সহায়তা করে এবং ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। তাই কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক রাখতে জলপাই খাওয়া উচিত।
মানসিক চাপ কমানো
জলপাই যেহেতু স্বাস্থ্য সম্মত এক ধরনের খাবার এবং গর্ভাবস্থায় নিয়ম করে জলপাই খেলে অতিরিক্ত মানসিক চাপ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। যে গর্ভবতী মহিলারা প্রথম বাচ্চা কনসিভ করে থাকে, তখন তারা বিভিন্ন ধরনের মানসিক টেনশন ভোগে। তাই এ সকল মানসিক টেনশন দূর করার জন্য জলপাই সহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর খাবার এবং ফল খাওয়া উচিত।
আরো পড়ুনঃ বিট ফলের উপকারিতা কি কি বিস্তারিত জানুন
বিষাক্ত টক্সিন দূর করতে
জলপাই খাওয়ার ফলে কিডনি কার্যকারিতা ঠিক রাখে এবং শরীর থেকে বিষাক্ত টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে। তাই গর্ভবতী নারীদের অন্যান্য সকল ঝুঁকি থেকে বাঁচার জন্য জলপাই খাওয়া উচিত।
হজম শক্তি উন্নত
গর্ভাবস্থায় অনেকে খাবার খেতে পারে না আবার অনেকেই আছে যাদের রুচি ভালো থাকে ফলে তারা অনেক কিছু খেয়ে ফেলে। এবং পরবর্তীতে পেটের অনেক সমস্যা হয়, ফলে হজম প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে, তাই হজম প্রক্রিয়া উন্নত করার জন্য গর্ভাবস্থায় বেশি বেশি ফল খাওয়া উচিত।
ব্রেন সুরক্ষা
গর্ভাবস্থায় মহিলাদের ব্রেন বা মস্তিষ্ক ঠিক রাখা অত্যন্ত জরুরি এ সময় উত্তেজনা হলে শিশুর অনেক উপর প্রভাব ফেলতে পারে। তাই মস্তিষ্ক ঠিক রাখার জন্য জলপাই খুবই কার্যকারী একটি উপাদান।
চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে
গর্ভাবস্থায় মহিলাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয় । তার মধ্যে সবচাইতে একটি বড় সমস্যা হলো চুল ঝরে পড়া। কারণ এ সময়ে শারীরিক ভাবে অসুস্থ থাকার ফলে শরীরের এবং চুলের যত্ন নেয়া সম্ভব হয় না ফলে চুল ঝরে পড়ে। তাই অতিরিক্ত চুল ঝরে পড়া কমাতে জলপাই খাওয়া উচিত কারণ জলপাইয়ের পুষ্টিগুণ মাথার ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
একটি জলপাই এ কি পরিমাণ পুষ্টি উপাদান রয়েছে
জলপাই কম বেশি সকলেই পছন্দ করে। অনেকেই জানে না জলপাই কি কি পুষ্টি উপাদান রয়েছে। প্রতিদিন যদি একটা করেও জলপাই খাওয়া হয় তাহলে কি পরিমান পুষ্টি উপাদান গ্রহণ করা যাই এবং একটি গর্ভবতী নারীর জন্য কতটা স্বাস্থ্যসম্মত এ সম্পর্কে আপনাদের জানা দরকার তাই না? চলুন একটি জলপাইয়ে কি পরিমান পুষ্টি উপাদান থাকে এবং কি কি পুষ্টি উপাদান রয়েছে সে নিয়ে বিস্তারিত জানানো যাক।
ক্রমিক নং | পুষ্টি উপাদান | পরিমান |
---|---|---|
১ | ক্যালোরি | ৫-৭ ক্যালোরি |
২ | ফ্যাট | ০.৫-০.৭ গ্রাম |
৩ | মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট | ০.৪-০.৫ গ্রাম |
৪ | প্রোটিন | ০.১ গ্রাম |
৫ | কার্বোহাইড্রেট | ০.১-০.৩ গ্রাম |
৬ | চিনি | ০-০.১ গ্রাম |
৭ | ফাইবার | ০.১ গ্রাম |
৮ | সোডিয়াম (লবণ) | ৩০-৪০ মিলিগ্রাম |
৯ | ভিটামিন ই | সামান্য পরিমাণ |
১০ | আয়রন | ০.০৫ মিলিগ্রাম |
১১ | ক্যালসিয়াম | ২-৪ মিলিগ্রাম |
১ | পটাসিয়াম | ১ মিলিগ্রামের কম |
গর্ভাবস্থায় কয়টি জলপাই খাওয়া উচিত

১০০ গ্রাম জলপাইয়ের পুষ্টি উপাদান সমূহ
ক্রমিক ন | পুষ্টি উপাদান | পরিমান |
---|---|---|
১ | ফাইবার | ৩-৪ গ্রাম |
২ | ভিটামিন ই | ৩.৮ মিলিগ্রাম |
৩ | ফ্যাট | ১১-১৫ গ্রাম |
৪ | ক্যালোরি | ১১৫ ক্যালোরি |
৫ | মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট | ৭-১১ গ্রাম |
৬ | প্রোটিন | ১ গ্রাম |
৭ | কার্বোহাইড্রেট | ৬ গ্রাম |
৮ | ভিটামিন ই | ৩.৮ মিলিগ্রাম |
৯ | আয়রন | ৩.৩ মিলিগ্রাম |
১০ | পটাসিয়াম | ৪২ মিলিগ্রাম |
১১ | ক্যালসিয়াম | ৮৮ মিলিগ্রাম |
১২ | ম্যাগনেশিয়াম | ৪ মিলিগ্রাম |
জলপাই খাওয়ার সতর্কতা
জলপাই খাওয়ার উপকারিতা অবশ্যই রয়েছে তবে অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ সতর্কতা অনুযায়ী খেলে অনেক সমস্যা থেকে রক্ষ। যে কোন জিনিস প্রয়োজনে অতিরিক্ত খাওয়া উচিত নয় এবং গর্ভকালীন সময়ে মেয়েদের অনেক কিছুই নিয়ম এবং পরিমিত পরিমাণে খাওয়া দরকার। জলপাই খাওয়ার সতর্কতা গুলো কি কি জেনে নেয়া যাক।
গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়া ভালো তবে অতিরিক্ত পরিমাণে এড়িয়ে চলা উচিত কারণ যেহেতু এতে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট রয়েছে তাই পরি প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত খেলে শিশুর স্বাভাবিক বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
জলপাই খাওয়ার সময় আপনাকে অবশ্যই সতর্কতা থাকতে হবে বাসি কিংবা নষ্ট জলপাই খাওয়া উচিত নয়। এতে পেটের সমস্যা হতে পারে তাই তাজা, কাঁচা জলপাই খাওয়া উচিত।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা ও নিয়ম
গর্ভাবস্থায় নারীদের ডায়াবেটিকস এবং উচ্চ রক্তচাপ জনিত বিভিন্ন সমস্যা থাকে এ ধরনের কোন সমস্যা দেখলে জলপাই খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন পরামর্শ নিয়ে তারপরে খেতে পারেন।
কাঁচা জলপাই খাওয়া ভালো তবে অনেক মসলা বা মরিচ, ঝাল করে আচার বানিয়ে প্রতিনিয়ত খাওয়া সেটা উচিত নয়। কারণ প্রতিদিন জলপাইয়ের আচার খেলে পেটে গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে যা গর্ভবতী মহিলার জন্য একদম ভাল নয়।
জলপাই যেহেতু টক, ফাইবার যুক্ত একটি খাবার তাই টক জিনিস বেশি খেলে পেটের সমস্যা হতে পারে অনেক সময় পাতলা পায়খানা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও যাদের একটুতেই এসিডিটির সমস্যা হয় তারা এটি অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
যাদের কিডনির সমস্যা রয়েছে তারা অতিরিক্ত জলপাই খাওয়া থেকে বিরত থাকুন কারণ জলপাই অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে কিডনিতে পাথর জনিত বিভিন্ন সমস্যা আরো জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
বর্তমানে এলার্জি সমস্যা খুবই জাতীয় একটি সমস্যা। বর্তমানে এলার্জি নাই এরকম মানুষের পাওয়া অসম্ভব। যাদের অতিরিক্ত এলার্জি আছে তারা এই জলপাই খাওয়া থেকে বের হতে থাকুন কারণ খাওয়ার ফলে তলে ত্বকে অনেক ধরনের ফুসকুড়ি রেশ এবং শ্বাস কষ্ট জনিত অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
জলপাইয়ের তেলে স্বাস্থ্য উপকারিতা
জল পায়ের তেলে পুষ্টিগুণ এবং স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। জলপাইয়ের তেল বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা যায়। জলপাই তেল খাবার রান্না, চুলে, ত্বকে এবং শরীরের বিভিন্ন প্রয়োজনে ব্যবহার করা যায়। এর ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো।
- বিভিন্ন ধরনের খাবার যেমন সালাদ, সুপ, পাস্তা বিভিন্ন খাবারে ভার্জিন অয়েল হিসেবে জলপাইয়ের তেল ব্যবহার করা হয়। এ দিল অতিরিক্ত আছে রান্না করা উচিত নয় হালকা আছে খাবার রান্না করা ভালো।
- এছাড়াও জলপাইয়ের তেল ত্বকে ব্যবহার করলে রাতে ঘুম অনেক ভালো হয়। এটেল শিশুর শরীরে মেসেজ করলে শিশুর শরীর অনেক মসৃণ এবং নরম থাকে এবং শিশুর মস্তিষ্ক ভালো রাখে।
- গর্ভকালীন মহিলাদের পেটে অনেক ফাটা দাগ থাকে যেগুলো বাচ্চা ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরেও থেকে যায়। এ ধরনের দাগগুলো এই জলপাইয়ের তেল প্রতিনিয়ত ম্যাসাজ করে হালকা গরম সেক দিলে আস্তে আস্তে এই দাগ গুলো নির্মূল হয়ে যায়।
- এছাড়াও যারা অতিরিক্ত মোটা তাদের শরীরে অনেক ফাটা দাগ থাকে সেই দাগগুলো দূর করতে এই জলপাই তেল ব্যবহার করতে পারেন।
- জলপাই তেল রান্নার চাইতে কোন খাবারের উপরে হালকা করে ছিটিয়ে দিলে এর গুনাগুন ঠিক থাকে।
- এছাড়াও মেয়েরা এই জলপায়ের তেল মুখের ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন মেকআপ রিমুভার হিসাবে। মেকআপ রিমুভ করতে এই তেল কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
- এতেল চুলে ব্যবহার করলে চুলের গোড়া শক্ত হয় এবং চুল অনেক সিল্কি এবং উজ্জ্বল দেখায়।
- জলপাইয়ের তেল ব্যবহার ফলে ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটাই কমাতে সাহায্য করে।
শিশুদের জলপাই খাওয়ার উপকারিতা
শিশুদের জলপাই খাওয়ার উপকারিতা আছে। এতে ভিটামিন এ, ই, সি ক্যালসিয়াম ইত্যাদি যুক্ত একটি ফল তাই এটি খেলে শিশুর স্বাভাবিক বিকাশে সহায়তা করে। এতে ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস থাকার ফলে শিশুর দাঁত এবং হাড় গঠনে সহায়তা করে। এছাড়াও শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। শিশুদের খাওয়ার রুচি বৃদ্ধি করে।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খাওয়ার উপকারিতা ও কিছু সতর্কতা
তিন থেকে পাঁচ বছরের শিশুকে প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি জলপাই খাওয়ালে যথেষ্ট হবে। এর অতিরিক্ত খেলে পেটে সমস্যা হতে পারে এবং পেট ফেঁপে যেতে পারে। যদি শিশুর বয়স ৬ থেকে ১২ বছর হয় তাহলে প্রতিদিন তিন থেকে পাঁচটি অথবা ছয়টি জলপাই খাওয়ালে ভালো। যেহেতু শিশুরা বুঝে উঠতে পারে না তাই তাদেরকে খেতে ভালো লাগলেও আপনারা অতিরিক্ত দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
এছাড়াও আছে জলপাইয়ের আচার কিংবা রান্না করা জলপাই যা ভাতের সাথে খেতে অনেক সুস্বাদু। শিশুরাও এধরনের প্রক্রিয়াজাত করা জলপাই খেতে পছন্দ করে। তাই এ ধরনের প্রক্রিয়াজাত করা জলপাই হলে পরিমাণে আরো কম খাওয়াবেন। কারণ জলপায়ে লবণ দিলে এর সোডিয়ামের পরিমাণ বেড়ে যায় যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
ছেলেদের জলপাই খাওয়ার উপকারিতা ও পরিমাণ

অতিরিক্ত রক্তচাপ কমাতে এবং দেহের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করতে জলপাই খাওয়া জরুরী। তবে ছেলেরা অতিরিক্ত লবণযুক্ত জলপাই খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। পুষ্ট এবং কাঁচা জলপাই খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকার।
জলপাইয়ের পাতার গুণাবলী ও ব্যবহার
জলপাইয়ের পাতার অনেক গুণাবলী রয়েছে। জলপাইয়ের পাতা ব্যবহার করা যায় এটা অনেকেরই অজানা। যারা জলপাইয়ের পাতা কিভাবে ব্যবহার করতে হয় জানেন না এবং এর উপকারিতা গুণাবলী কি কি সে সম্পর্কে আপনারা এই পোস্টে জানতে পারবেন।
- জলপাইয়ের পাতা অতিরিক্ত ক্লান্তিবোধ আমাদের সাহায্য করে এবং হৃদ রোগের ঝুঁকি কমায়।
- জলপাইয়ের পাতা ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ থেকে সুরক্ষা দিতে সাহায্য করে।
- অতিরিক্ত অতিরিক্ত হাইপার টেনশন কমাতে জলপাইয়ের পাতা খুবই উপকারী।
- জলপাইয়ের পাতা পেস্ট বানিয়ে এতে সামান্য পরিমাণ মধু যুক্ত করে ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন ফলে ব্রণ ও বিভিন্ন ধরনের দাগ, ময়লা কমে।
- জলপাইয়ের পাতা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় এবং কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করতে সহযোগিতা করে।
- জলপাই পাতা শুকিয়ে চায়ের সাথে গরম পানিতে ফুটিয়ে পান করতে পারেন।
- এটি শরীর থেকে দূষিত টক্সিন দূর করে।
- জলপাই পাতা নির্যাস বের করে পান করলে ডায়াবেটিক্স নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
- জলপাইয়ের পাতা দিয়ে প্রতিনিয়ত চা খেলে উচ্চ রক্তচাপ কমায়।
- ত্বকের কোন জায়গা কেটে গেলে সেখানে জ্বালাপোড়া হয় সেই জ্বালাপোড়া কমাতে জলপাইয়ের পাতা পেস্ট বানিয়ে লাগালে ব্যাথা কমে যায়।
শেষ কথাঃ গর্ভাবস্থায় জলপাইয়ের স্বাস্থ্য উপকারিতা
আজকে জলপাই খাওয়া নিয়ে অনেক আলোচনা করা হলো। যারা জলপাইয়ের উপকারিতা এবং জলপাইয়ের বিভিন্ন কার্যকারিতা সম্পর্কে জানেন না তারা আজকের পোষ্টটি সম্পূর্ণ প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে জানতে পারবেন। গর্ভবতী প্রসূতি মহিলাদের জন্য জলপাই হতে পারে খুবই জাদুকরী একটি ফল। জলপাইয়ের পুষ্টিগুণ প্রত্যেকের গ্রহণ করা উচিত। যদি এই ফল সারা বছর পাওয়া যায় না তাই সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন। আজকের পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগে থাকলে কমেন্টে জানাবেন। ধন্যবাদ।।
টেকিসময় ডট কম ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url