বিট ফলের উপকারিতা কি কি বিস্তারিত জানুন

বিট ফলের রসে কি কি উপকারিতা রয়েছে জানতে চান? তাহলে সঠিক জায়গায় এসেছেন। এই ফলের ভেতরে অনেক পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে যেমন পটাশিয়াম ম্যাগনেসিয়াম খনিজ আয়রন ইত্যাদি যা আমাদের শরীরের জন্য উপকারী। বর্তমানে এই ফল সারা বছর পাওয়া যায়। 
বিট-ফলের-উপকারিতাতবে হ্যাঁ বিট ফল যেটাকে আমরা বিটরুট বলে থাকি এটি দেখতে যেমন সুন্দর ও এর অনেক ভালো ভালো পুষ্টিগুণ রয়েছে। বিট ফলের স্বাদ না থাকলেও এর পুষ্টিগুণ এবং উপকারিতা প্রচুর। বেশিরভাগ মানুষ এটি কাঁচা খেতেই পছন্দ করে। চলুন বিটরুটের উপকারিতা গুলো জেনে নেয়া যাক।

সূচিপত্রঃ বিট ফলের উপকারিতা কি কি 

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বিট ফলের উপকারিতা

বিট ফলের অনেক উপকারিতা হয়েছে। বিটরুট আস যুক্ত খাবার যা শরীরের জন্য খুবই কার্যকরী হিসেবে কাজ করে। আজ যুক্ত খাবারের প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার ফলে এটি শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিট ফলে নাইট্রেট থাকার ফলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সাহায্য করে থাকে এছাড়াও হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। তাই যারা অতিরিক্ত প্রেসারের রোগী আছেন তারা এ ফল প্রতিনিয়ত খেতে পারেন।

দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে বিট ফলের উপকারীতা। 

বিটরুট খাওয়ার ফলে দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পায়। প্রতিদিন ক কাঁচা বিটরুট খেলে চোখে রক্ত চলাচল ঠিক থাকে এবং চোখের ক্লান্তি দূর হয়। প্রতিদিন কাঁচা বিটফল খেলে দূরদৃষ্টি এবং ক্ষীণ দৃষ্টি জনিত সমস্যা দূর হয়। চোখের সমস্যা কমবেশি সকলেই ভোগে। তাই চোখের সমস্যা কমাতে বা চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি করতে বিট ফল খাওয়ার কোন বিকল্প নাই।

পেশির গঠনে বিট ফলের উপকারিতা।

পেশির গঠনে বির ফলের উপকারিতা অনেক। কারণ বিট ফল খাওয়ার ফলে শরীরের রক্ত সঞ্চালনের প্রক্রিয়া বেড়ে যায় এবং পেশির বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন সরবরাহে সাহায্য করে। এটি শরীরের ক্লান্তি বোধ কমিয়ে দেয়। পেশির বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি যেমন বেশি গঠনে অ্যামাইনো এসিড প্রস্তুত করতে সাহায্য করে থাকে। প্রতিদিন শরীর চর্চা করার ফলে শরীরে অনেক ঘাটতি হয় এ ঘাটতি পূরণ করার জন্য বিটের রস খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি।

হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে বিট ফলের উপকারিতা

বিট ফলের রসে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার রয়েছে যা অন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে এবং হজম শক্তি দ্রুত বৃদ্ধি করে এছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত সমস্যা সমাধান করে। প্রতিদিন এই ফলের রস খাওয়ার ফলে শরীর থেকে দূষিত টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে, পাকস্থলীর কার্যক্ষমতা ভালো রাখে। প্রতিদিন নিয়ম করে সকালে খালি পেটে এক গ্লাস বিট ফলের রস খেতে পারেন। তবে হজম প্রক্রিয়া আরও উন্নত করার জন্য এর সাথে সামান্য আদা এবং গাজর যুক্ত করতে পারেন। 

ত্বকের উজ্জ্বলতা বিট ফলের উপকারিতা

ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে এবং ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত ফল বিট অথবা বিট রুট খাওয়া জরুরী। যারা ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে এবং সুন্দর, মসৃণ ত্বক তৈরি করতে চান তারা এ ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান সমৃদ্ধ বিট ফল খেতে পারেন। এ বিট ফল ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে ।
বিট-ফলের-উপকারিতাত্বকে বিভিন্ন ধরনের দাগ কমাতে কার্যকরী। যেহেতু এই ফলে পানির পরিমাণ বেশি তাই ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করে।  ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়া দ্রুত উন্নত করে ত্বকের উপর প্রভাব ফেলে। ১ চা চামচ বিট রস, গোলাপ জল, মধু একসাথে একটি ফেসপ্যাক বানিয়ে ত্বকে লাগিয়ে রাখুন ১৫-২০ মিনিট পর পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন ফলে ত্বক অনেক উজ্জ্বল এবং নরম হয়।

লিভার ভালো রাখতে বিট ফলের উপকারিতা

লিভার আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। আমাদের অনেক অনিয়মিত খাবার ফলে লিভারের অনেক সমস্যা দেখা দেয়। অনেকেই লিভারের জন্ডিস হয়ে থাকে যা আমাদের জীবনের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। তাই এ ধরনের সমস্যা থেকে সমাধান পেতে বিট ফলের উপকারী একটি খাবার হিসেবে কাজ করে। কিভাবে খেলে এই ধরনের সমস্যা থেকে সমাধান পাওয়া যায় চলুন আলোচনা করা যাক। 

আরো পড়ুনঃ পাকা টমেটো খাওয়ার উপকারিতা ও এর কার্যকরী পুষ্টিগুণ সম্পর্কিত

এক গ্লাস বিট ফলের রস এবং এর সাথে ২-৩ চা চামচ লেবুর রস, আধা চা চামচ আদা, স্বাদমতো লবণ, ১ চা চামচ মধু একসাথে নিয়ে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে পান করতে পারেন। এভাবে প্রতিদিন পান করার ফলে লিভার পরিষ্কার হয় ও লিভারের কার্যক্ষমতা বেড়ে যায় এবং জন্ডিস ও লিভার জনিত বিভিন্ন সমস্যা থেকে সমাধান পাওয়া যায়।

স্ট্রোক ও হৃদ রোগের ঝুঁকি কমাতে বিট ফলের উপকারিতা

স্ট্রোক ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে বিটরুট খাওয়া খুবই উপকারী। কারণ এটি উচ্চ রক্তচাপ এবং ধমনীর বিভিন্ন কার্য ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। বিট ফলে থাকা নাইট্রেট রক্তনালি প্রসারিত করতে সাহায্য করে এবং উচ্চ রক্তচাপ কমায় এবং স্ট্রোক, হৃদরোগের ঝুঁকি দ্রুত কমাতে সাহায্য করে। হার্টের উপর থেকে অতিরিক্ত রক্তচাপ কমায়। কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক রাখে।ধমনীতে অতিরিক্ত চর্বি জমার ঝুঁকি কমায়। রক্তের স্বাভাবিক হার নিয়ন্ত্রণ করে।

শেষ কথাঃ বিট ফলের রসের উপকারিতা 

পরিশেষে আমরা বলতে পারি বিটফল এক ধরনের উপকারী ফল যা আপনারা সবজি হিসেবে এবং ফল হিসেবে দুই ভাবে চেনেন। এই ফল শীতকালে বেশি দেখা যায়। এই ফল বিশেষ করে ঠান্ডা আবহাওয়াতে বেশি ভালো উৎপাদন হয়। তবে সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে এবং সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করলে এই সবজি সারা বছর উৎপাদন সম্ভব। 

বিট ফল রান্নার চাইতে কাঁচা খাওয়া সবচাইতে বেশি উপকার। কাঁচা অবস্থায় এর গুনাগুন ঠিক থাকে। তাই যারা শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে চান এই ফল নিয়মিত খেতে পারেন এবং জুস করেও এর রস খাওয়া যায়। এছাড়ও ত্বকের সৌন্দর্যতা বাড়াতে এই ফলের উপকারিতা অনেক।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

টেকিসময় ডট কম ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url