গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা ও নিয়ম
গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা ও নিয়ম অবশ্যই জানা দরকার কারণ কলায় বিভিন্ন পুষ্টিতে ভরপুর এবং গর্ভাবস্থায় কলা খেলে প্রসূতি মা এবং বাচ্চার জন্য খুবই উপকার। যেহেতু কলাতে ফাইবার রয়েছে তাই এটি গর্ভবতী মায়ের জন্য খুবই কার্যকরী।
সূচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা
- কলায় কি কি ভিটামিন রয়েছে
- গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার নিয়ম
- গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন কয়টা কলা খাওয়া উচিত
- গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার সতর্কতা
- শেষ কথাঃ গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই কার্যকরী হতে পারে। কলা একটি পুষ্টিকর খাবার যা শরীরের বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের অভাব পূরণ করে থাকে। যেহেতু কলা সারা বছর পাওয়া যায় তাই গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। কলা একটি ফল যা সারা বছর খুব সহজে সংগ্রহ করা যায়। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের সব দেশেই কম বেশি কলা চাষ করা হয়।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেঃ উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার কোন বিকল্প নাই। কলাতে পটাশিয়াম থাকার ফলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে থাকে।
বমি বমি ভাব কমায়ঃ গর্ভাবস্থায় অনেক ক্ষেত্রে গর্ভবতী মহিলাদের বমি বমি ভাব হয়ে থাকে তাই এ সকল সাধারণ সমস্যাগুলো কমানোর জন্য কলা খাওয়া উচিত।
হাড় মজবুত করতেঃ হাড়ের সুরক্ষায় কলা খাওয়া উচিত। গর্ভাবস্থায় কলা খেলে যেহেতু কলাতে ক্যালসিয়াম থাকে তাই শিশুর এবং মায়ের দুজনের হাড় মজবুত করতে সহায়তা করে এবং শিশুর হাড় গঠনে সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ সকালে কলা খাওয়ার উপকারিতা ও এর ১০ টি পুষ্টিগুণ সম্পর্কে
শিশুর ইস্নায়ুতন্ত্রের বিকাশঃ ভ্রূণের মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশ ঘটাতে গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়া উচিত কারণ কলায় ফলিক এসিড রয়েছে। এছাড়াও নিউরাল টিউবের ডিফেক্ট প্রতিরোধ করতে গর্ভবতী মহিলার কলা খাওয়া উচিত।
শক্তি বৃদ্ধি করতেঃ কলায় শর্করা থাকার ফলে গ্লুকোজ, ফ্রুকটোজ, সুক্রোজ উপাদান শরীরে শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এছাড়াও গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ক্লান্তি কমাতে সাহায্য করে থাকে।
কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতেঃ গর্ভাবস্থায় সবচাইতে বড় সমস্যা হচ্ছে কোষ্ঠকাঠিন্য কারণ এই সময় কোষ্ঠকাঠিন্য হলে গর্ভবতী মহিলাদের অনেক সমস্যা হয়। তাই যারা কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত সমস্যা থেকে ভুগছেন তারা গর্ভাবস্থায় কলা খেতে পারেন।
ইমিউনিটি সিস্টেম শক্তিশালীঃ গর্ভাবস্থায় অনেক মহিলার ইমিউনিটি কমে যায়। তাই ইউনিটি সিস্টেমকে দ্রুত শক্তিশালী করতে চাইলে এবং শিশুকে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে চাইলে কলা খেতে পারেন।
ফলিক অ্যাসিড সরবরাহঃ পাকা কলাতে ফলিক এসিড থাকার ফলে এটি ভ্রুনের স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশ ঘটাত এটি খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়া শিশির মেরুদণ্ড ঘটনায় এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
কলায় কি কি ভিটামিন রয়েছে
কলায় কি কি ভিটামিন রয়েছে এ সম্পর্কে সকলের জানা উচিত। গলায় যে সকল ভিটামিন রয়েছে তা আমাদের শরীরের জন্য খুব উপকারী। কলাতে কি কি ভিটামিন রয়েছে তা আলোচনা করি।
- ভিটামিন এ
- ভিটামিন বি ৬
- ভিটামিন সি
- ভিটামিন এ
- ভিটামিন কে
- ফাইবার
- ফোলেট
- ম্যাগনেসিয়াম
- পটাশিয়াম
গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার নিয়ম
গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে যারা জানেন না তারা আজকের পর থেকে জেনে নিতে পারেন। কারণ গর্ভাবস্থায় সঠিক কলা খাওয়ার নিয়ম না জানলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। গর্ভাবস্থায় কিভাবে কলা খাওয়া যায় আলোচনা করা যাক।
সকালে নাস্তায়ঃ সকালে নাস্তা খাওয়ার সময় গর্ভবতী মহিলারা কলা খেতে পারেন। তবে এর সাথে রুটি রাখতে পারেন। গর্ভাবস্থায় সকালে কলা খেলে ক্লান্তি দূর হয়। হালকা গরম দুধের সাথে রুটি অথবা শুধু কলা খেতে পারেন।
সকালের মাঝামাঝি সময়েঃ সকালের মাঝামাঝি সময়ে কলা খেতে পারেন। কারণ অনেক সময় গর্ভবতী মহিলাদের বমি বমি ভাব হতে পারে সেই বমি বমি ভাব দূর করার জন্য কলা খেতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ কলার খোসা দিয়ে কিভাবে রূপচর্চা করা যায়
দুপুরে খাবারের পরেঃ দুপুরে খাবারের পরে কলা খেতে পারেন কারণ এটি হজম প্রক্রিয়া দ্রুত উন্নত করতে সাহায্য করবে। অতএব কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত সমস্যা হলে সেটি থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।
বিকেলের রাস্তায়ঃ গর্ভবতী মহিলাদের খুব ঘন ঘন ক্ষুধা লাগে তাই বিকেলে হালকা নাস্তার সাথে এনার্জি পাওয়ার জন্য কলা খেতে পারেন। তবে রাতে কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন কারণ। কারণ অনেক সময় হজম প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটাতে পারে।
গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন কয়টা কলা খাওয়া উচিত
গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন কয়টা কলা খাওয়া উচিত নির্ভর করবে গর্ভবতী মহিলার শারীরিক অবস্থার উপর। তবে গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন এক থেকে দুইটি কলা খাওয়া উচিত। যাদের শরীরে কোন সমস্যা হয় না তারা এর চাইতে বেশি খেতে পারেন। এইমাত্র অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নাই কারণ গর্ভাবস্থায় অনেক কিছু নিয়ম মেনে খাওয়া-দাওয়া করতে হয়।
ভিটামিন বি ৬, পটাশিয়াম, ফাইবার ইত্যাদি রয়েছে তাই দৈনিক চাহিদা পূরণের জন্য কলা ১ থেকে ২ টা খেতে পারেন। গর্ভাবস্থায় অনেক সময় কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে থাকে, পাকা কলা খেলে উপকার হতে পারে। তবে গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিকস হয়ে থাকে তাদের অতিরিক্ত কলা খাওয়া যাবে না চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে দিনে অর্ধেক খাওয়া যেতে পারে।
গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার সতর্কতা
গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার সতর্কতা অবশ্যই অবলম্বন করে চলতে হবে। কারণ গর্ভাবস্থায় মেয়েদের চিন্তা মাথায় রাখতে হবে কারণ পরবর্তী মা এবং অনাগত শিশুর। তাই এ সময় অতিরিক্ত খাওয়া বা আজেবাজে খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত থাকতে হবে। গর্ভাবস্থায় পাকা কলা খাওয়া অবশ্যই ভালো যেহেতু বিভিন্ন পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে তাই কলা খাওয়া উচিত।
- যাদের গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হয় তারা অতিরিক্ত কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন কারণ কলায় চিনি থাকার ফলে রক্তের সরকারের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।
- অতিরিক্ত কলা খেলে ওজন বেড়ে যেতে পারে কারণ কলাতে পটাশিয়াম ও কার্বোহাইড্রেট বেশি থাকে। তাই প্রতিদিন এক থেকে দুইটি খাওয়া উপকার।
- কলায় ভাইবার টাকার ফলে হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে সাহায্য করে তাই অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে পেটের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- যদি এলার্জিজনিত সমস্যা থাকে তাহলে গরবস্থায়ী কলা সাবধানে দেওয়ার জন্য করে খাওয়া উচিত। কারণ অনেক ক্ষেত্রে গায়ে চুলকানি এবং শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
- অতিরিক্ত পাকা কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এটি অনেক ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যের জন্য উপকার নাও হতে পারে।
শেষ কথাঃ গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় খাবার খাওয়াই বিশেষ লক্ষ্য রেখে খাওয়া উচিত। কারণ গর্ভাবস্থায় সচেতনতা অবলম্বন না করে চললে হিতের বিপরীত হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়া ভালো তবে এটি পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। কারণ প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাওয়া উচিত নয়। আপনার শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেম লক্ষ্য রেখে খাওয়া উচিত। গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা এবং নিয়ম সম্পর্কে যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন ধন্যবাদ
টেকিসময় ডট কম ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url