কানাডা ভিসা ফি ফ্রম বাংলাদেশ
বাংলাদেশ থেকে কানাডা যেতে বিভিন্ন ধরনের খরচ হয়ে থাকে তবে এটা নির্ভর করে কানাডা যাওয়ার ভিসার ওপরে। আপনি কোন বিষয়ে কানাডা যেতে চান সে সকল বিষয়ের উপরে নির্ভর করে বাংলাদেশ থেকে কানাডা যাওয়ার খরচ।
কানাডা যাওয়ার ভিসার খরচ কত হয় এ সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা দেওয়াটা একটু কঠিন কারণ আপনি কার মাধ্যমে বা কোন এজেন্সির মাধ্যমে কানাডা যেতে চান সেটার উপরে নির্ভর করে কারণ বিভিন্ন এজেন্সির খরচ বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে।
সূচিপত্রঃ কানাডা ভিসা ফি ফ্রম বাংলাদেশ
- কানাডা ভিসা ফি কত
- কানাডা যেতে কত টাকা লাগে
- সরকারিভাবে কানাডা ভিসার আবেদন ফি
- কত বছর বয়সে কানাডা যাওয়া যায়
- কানাডা ভিসা প্রসেসিং সময়
- কানাডা ভিসার জন্য আবেদন পদ্ধতি
- শেষ কথাঃ কানাডা ভিসা ফি ফ্রম বাংলাদেশ
কানাডা ভিসা ফি কত
কানাডা ভিসা ফি নির্ভর করে ভিসার উদ্দেশ্যের উপরে। উত্তর আমেরিকা মহাদেশের কানাডা একটি উন্নত দেশ এবং এখানকার অর্থনীতি এবং পরিবেশ খুবই উচ্চ এবং উন্নত। তাই উন্নত জীবন যাপনের জন্য মানুষ কানাডা পাড়ি দিয়ে থাকে। কানাডা যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের ভিসা আছে । স্টুডেন্ট ভিসার খরচ ৩ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ হয়ে থাকে।
তারপরও ভিসার খরচ নির্ভর করে কাজের উদ্দেশ্যের উপরে। তাছাড়া স্টুডেন্ট ভিসা ছাড়া অন্যান্য ভিসাতে যেতে চাইলে খরচ হবে ৮ লক্ষ থেকে ১২ লক্ষ টাকা। তবে ভিসার খরচটা নির্ভর করে অনেক ক্ষেত্রে এজেন্সিদের ওপর বিভিন্ন এজেন্সি কোম্পানিগুলো বিভিন্ন রকম অ্যামাউন্ট বা টাকা নিয়ে থাকে।
কানাডা যেতে কত খরচ লাগে
কানাডা যেহেতু একটি উন্নত শীল দেশ এবং এখানকার জীবন যাত্রার মান অনেক উন্নত তাই এখানে খরচ একটু বেশি। অন্যান্য দেশে তুলনায় কানাডার যাওয়া খরচ তুলনামূলক বেশি। কানাডা যাওয়ার জন্য সবচাইতে যেটি বেশি প্রয়োজন সেটা হচ্ছে ব্যাংক স্টেটমেন্ট। কানাডা যাওয়ার জন্য ব্যাংক স্টেটমেন্ট ১০ লক্ষ থেকে ১২ লক্ষ টাকা দেখাতে হয়।
বেশিরভাগ স্টুডেন্টরা কানাডা যেতে বেশি আগ্রহ প্রকাশ করে কারণ তারা উচ্চশিক্ষা এবং উন্নত শিক্ষার জন্য কানাড়া যেতে আগ্রহী হয়। স্টুডেন্ট ভিসা ছাড়াও কানাডাতে বিভিন্ন ধরনের কাজের সুযোগ রয়েছে যেমন-
- কাজের জন্য শ্রমিক
- কৃষিকাজ
- ইলেকট্রিশিয়ান
- আইটি প্রতিষ্ঠান অথবা ডিপার্টমেন্ট
- ডেলিভারি ম্যান
- সেলসম্যান
- ড্রাইভিং
- সেভ ও কুকিং ইত্যাদি
তবে আপনি কোন ধরনের ভিসায় যেতে চাচ্ছেন সেটার উপর আপনার খরচ নির্ভর করবে। স্টুডেন্টদের জন্য কানাডা যাওয়ার খরচ পড়বে পাঁচ লক্ষ থেকে ছয় লক্ষ টাকা। তবে অন্যান্য কাজের উদ্দেশ্যে কানাডা যেতে চাইলে খরচ পড়বে 9 লক্ষ থেকে ১২ লক্ষ টাকা। তবে নির্দিষ্ট করে এরকমই খরচ হবে তা কিন্তু নয় এর চাইতে কম খরচ হতে পারে অথবা বেশিও খরচ হতে পারে।
সরকারিভাবে কানাডা ভিসার আবেদন ফি
কানাডা দুই ভাবেই যাওয়া যায় সরকারিভাবে আবেদন করতে পারেন এবং বেসরকারিভাবে আবেদন করতে পারেন। তবে যেকোনো দেশের ভিসা জন্য সরকারিভাবে আবেদন করলে খরচ অনেকটাই কম হয়, তবে সময় একটু বেশি লাগে। কিন্তু বেসরকারিভাবে করলে কম সময়ে ভিসা ডেলিভারি দিবে তবে টাকা বেশি লাগে।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়ার উপায় ও কিছু নিয়মনীতি
ভিসা আবেদন ফি জনপ্রতি CAD100 এছাড়াও রয়েছে বায়োমেট্রিক ফি জনপ্রতি CAD 85 অর্থাৎ ভিসা ফি বাংলাদেশি টাকায় ৪০০০ টাকা। সরকারিভাবে আবেদন করতে খরচ হয় আর ৯৭০০ থেকে ১০৫০০ টাকা। তবে যেহেতু বেশি স্টুডেন্ট ভিসাতে কানাডা যাওয়া বেশি হয় তাই স্টুডেন্ট ভিসার খরচ ৯ হাজার টাকা।
এছাড়া টুরিস্ট ভিসার খরচ জনপ্রতি আবেদন ফি ৯০০০ টাকা থেকে ১০০০০ হাজার টাকা। তবে কানাডা যাওয়ার জন্য স্টুডেন্ট ভিসা এবং টুরিস্ট চাইতে পারমিট ভিসার আবেদন ফি সবচাইতে বেশি। ওর পারমিট ভিসার আবেদন ফি ১০০০০ থেকে ৬৬০০ টাকা। সরকারি ভাবে ছাড়া বেসরকারিভাবে করলে এর চাইতে আরো অনেক বেশি পড়বে।
কত বছর বয়সে কানাডা যাওয়া যায়
কত বছর বয়সে কানাডা যাওয়া যায় এ সম্পর্কে ধারণা পেতে হলে এই পোস্টটি সম্পন্ন করুন। কানাডা অথবা বিশ্বাস যেকোনো দেশে যাওয়ার জন্য অবশ্যই অ্যাডাল্ট অর্থাৎ উপযুক্ত বয়স প্রয়োজন। উপযুক্ত বয়স ছাড়া কখনোই দেশের বাইরে যাওয়া সম্ভব নয়। তবে কানাডা যেতে হলে আপনাকে অবশ্যই ১৮ বছর বয়স হতে হবে।
স্টুডেন্ট ভিসায় যেতে চাইলে সর্বনিম্ন ১৮ বছর বয়স হতে হবে কিন্তু যদি সরকার বা অর্ক পারমিটের জন্য যেতে চান তাহলে অবশ্যই ২০ বছর হতে হবে। সর্বনিম্ন ২০ বছর ছাড়া সরকার বিষয় পারমিশন দেওয়া হবে না। তবে টুরিস্ট ভিসায় যেতে চাইলে ১৮ বছরের নিচে যেতে পারবেন। তবে এজন্য আপনাকে অবশ্যই অভিভাবকের অনুমতি প্রয়োজন হবে।
অনুমতি পত্র ছাড়া কখনই টুআরিস্ট ভিসায় ১৮ বছর নিচে যেতে পারবেন না। তবে কানাডা যেতে চাইলে বাংলাদেশিদের জন্য কিছু সুবিধা আছে কারণ সেখানে স্টুডেন্টদের জন্য এবং কাজ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ফ্যাসিলিটি আছে যেকোনো ক্যাটাগরি পছন্দ করে আপনি কানাডা যেতে পারেন তবে এর জন্য আপনাকে অবশ্যই ব্যাংক স্টেটমেন্ট থাকতে হবে।
কানাডা ভিসা প্রসেসিং সময়
কানাডা ভিসা প্রসেসিং সময় নির্ভর করে আপনার ভিসার উপরে। হঠাৎ আপনি কোন ধরনের বিষয় কানাডা যেতে চান সেটার উপরে যেমন টুরিস্ট ভিসা, স্টুডেন্ট ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ইত্যাদি।
টুরিস্ট ভিসা
টুরিস্ট ভিসা অথবা ভিজিটর ভিসায় সাধারণত ২ থেকে ৩ মাস সময় লাগে ভিসা প্রসেসিং হতে। এ বিশাল সময় শুরু হয় আপনার আবেদন জমা দেওয়ার পর থেকে এবং বায়োমেট্রিক তথ্য জমা দেওয়ার কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর থেকে।
স্টুডেন্ট ভিসা
স্টুডেন্ট ভিসায় যেতে চাইলে ৪ থেকে ৫ সপ্তাহ সময় লাগে তবে এর থেকে বেশি সময় লাগতে পারে। আবেদন জমা দেওয়ার পর থেকে এর সময় শুরু হয় তবে এটি অনেক ক্ষেত্রে এজেন্সিদের কাজকর্মের উপর নির্ভর করে কারণ এরা সিরিয়াল অনুযায়ী কাজ করে তাই অনেক ক্ষেত্রে সময় বেশি লাগতে পারে।
ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য সময় লাগে আবেদন জমা দেওয়ার পর থেকে 6 থেকে 8 মাস। তবে এর চেয়ে তো বেশি সময় লাগতে পারে। কারণ আবেদন জমা দেওয়ার পর সকল কিছুর তথ্য যা যা যা করার জন্য এজেন্সিরা সময় বেশি নিয়ে থাকে। কাগজপত্র সিরিয়ালের সবার নিচ চলে যাওয়ার ফলে অনেক ক্ষেত্রে সময় বেশি লাগতে পারে।
সুপার ভিসা অর্থাৎ পিতা মাতা বা দাদা দাদাদের জন্য ভিসা
এ ধরনের ভিসা হাতে পেতে সময় লাগে প্রায় ৮ থেকে ১২ সপ্তাহ। তবে এমার্জেন্সি বলে আবেদন করলে এর চাইতে সময় কম লাগতে পারে তবে এর জন্য অতিরিক্ত ফি জমা দিতে হবে।
কানাডা ভিসার জন্য আবেদন পদ্ধতি
কানাডা ভিসার জন্য আবেদন পদ্ধতি অনেকেই জানেনা। যারা কানাডা ভিসা আবেদন পদ্ধতি জানেনা তাদের জন্য আজকের পোস্টটি খুবই উপকার আসবে। কানাডা ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে কয়েকটি নির্দিষ্ট নীতিমালা অনুযায়ী আবেদন করতে হবে।
ভিসার ধরন নির্ধারণ
কানাডা ভিন্ন ধরনের বিষয় যাওয়া যায় তবে আপনাকে যা যা করতে হবে কোন ধরনের বিষয়ে আপনি কানাডা যেতে চাচ্ছেন? কানাডা ভিসার পদ্ধতি গুলো নিজে দেয়া হলো।
আরো পড়ুনঃ কানাডার ভিজিট ভিসার নিয়ম ও ভিজিট ভিসা প্রসেসিং টাইম সম্পর্কে বিস্তারিত
- ভিজিটর ভিসা অর্থাৎ পরিবার অথবা একাই ও বন্ধু-বান্ধবের সাথে যাওয়া।
- স্টুডেন্ট ভিসা অর্থাৎ উচ্চ শিক্ষা অর্জন করার জন্য শিক্ষার ভিসা।
- ওয়ার্ক পারমিট ভিসা অর্থাৎ বিভিন্ন ধরনের কাজ করার জন্য ভিসা। যেমন ড্রাইভিং ওয়ার্কার সেলসম্যান ইত্যাদির জন্য ভিসা।
- সুপার ভিসা অর্থাৎ পিতা মাতা বা দাদা-দাদির জন্য যে সকল ভিসা সেগুলোকে বোঝায়।
- ব্যবসার জন্য ভিসা অর্থাৎ ব্যবসায়ী কার্য ক্রমের জন্য বিশার আবেদন করা।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বা ডকুমেন্ট তৈরি
- বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে যেটি কমপক্ষে ছয় মাস মেয়াদী হতে হবে।
- সম্পূর্ণভাবে পূরণ করা ভিসা আবেদন ফরম।
- বায়োমেট্রিক তথ্য যদি প্রয়োজন হয়।
- আপনার ছবি অর্থাৎ পাসপোর্ট সাইজের বা ভিসার জন্য যে সকল ছবি তারা নির্ধারণ করবে।
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট ব্যাংকে ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকা থাকতে হবে।
- হোটেল বুকিং এর কাগজপত্র বা থাকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্র।
- চাকরি অথবা শিক্ষার জন্য প্রমাণ পত্র যদি প্রয়োজন হয়।
- আপনার ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি।
- আবেদন ফি জামা প্রদানের রশিদ।
- টিকিট অর্থাৎ ভ্রমণের জন্য যে ট্রাভেলে যাবেন সেই ট্রাভেলের টিকিট।
- আপনার পার্সোনাল মোবাইল নাম্বার।
- অভিভাবক বা অন্যান্য কারো মোবাইল নাম্বার যদি প্রয়োজন হয়।
কানাডা যাওয়ার জন্য উপরের এ সকল কিছু পূরণ করে আবেদন করতে পারেন। তবে প্রত্যেক বছর আবেদনের কিছু নিয়ম নীতি থাকে যেগুলো পরিবর্তন হয়ে থাকে তবে অনলাইনে পূরণ করার সময় সবকিছু দেখে শুনে ভালোভাবে পূরণ করবেন। এবং সকল কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে তারপরে অনলাইনে আবেদন পত্র জমা দিবেন।
শেষ কথাঃ কানাডা ভিসা ফি ফ্রম বাংলাদেশ
কানাডা যাওয়ার জন্য ভিসা ফি সংক্রান্ত সকল তথ্য আজকের পোস্টে আলোচনা করা হলো আপনারা যারা কানাডা যেতে ইচ্ছুক তারা উপযুক্ত সকল তথ্য ভালোভাবে পড়ে তারপরে আপনারা কানাডা যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে পারেন এবং আশা করছি কানাডা যাওয়ার ভিসা সম্পর্কে আজকের পোস্টটিতে জানতে পেরেছেন।
তবে বাংলাদেশীদের জন্য কানাডায় যাওয়ার কিছু সুযোগ সুবিধা রয়েছে। কারণ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে এখন বাংলাদেশ থেকে কানাডা যাওয়া যায়। তবে খরচ অন্যান্য দেশের চাইতে কানাডাতে বেশি। তবে এটি অনেক ক্ষেত্রে দালাল অথবা এজেন্সি কোম্পানি গুলোর উপর নির্ভর করে। তবে যে এজেন্সির মাধ্যমে আপনি যেতে চাচ্ছেন সে ব্যাপারে আপনি আগে থেকে জেনে নেবেন পোস্টটি ভাল লেগে থাকলে কমেন্টে জানাবেন ধন্যবাদ।।
টেকিসময় ডট কম ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url