গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খাওয়ার উপকারিতা ও কিছু সতর্কতা
গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আজকে আলোচনা করতে চলেছি। যদি আপনারা এ বিষয়ে না জানেন তাহলে আজকের পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন। গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খাওয়া অবশ্যই ভালো তবে এর কিছু নীতিবাচক দিক রয়েছে।
গর্ভবতী মায়েদের অনেক কিছু খাওয়া ভালো এবং অনেক কিছু খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। তবে আজকের বিষয় গর্ভবতী মায়েরা কামরাঙ্গা খেলে কি হয় এ সম্পর্কে আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করতে চলেছি। কামরাঙ্গা যেহেতু ভিটামিন সি যুক্ত ফল অবশ্যই এটি গর্ভবতী মায়েদের জন্য উপকার হবে।সূচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খাওয়ার উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খাওয়ার উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা কিভাবে খাওয়া যায়
- গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ওজন কমাতে কামরাঙ্গা
- গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা কি খাওয়া উচিত
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
- কামরাঙ্গার পুষ্টিগুণ ও শিশুর বিকাশে ভূমিকা
- গর্ভাবস্থায় কি পরিমান কামরাঙ্গা খাওয়া উচিত
- গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খাওয়ায় কিছু সতর্কতা
- শেষ কথাঃ গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খাওয়ার উপকারিতা প্রচুর। কারণ এ সময় গর্ভবতী মায়েরা কামরাঙ্গা গেলে ভিটামিন সি এর অভাব পূর্ণ হয়। এবং অনাগত বাচ্চার ও ভিটামিন সি এর অভাব পূর্ণ হয়। তবে কামরাঙ্গা খাওয়ার উপকারিতা থাকলেও গর্ভাবস্থায় অনেক কিছু চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তারপরে খাওয়া উচিত।
রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে
রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে গর্ভবতী মায়েদের জন্য কামরাঙ্গা খুবই উপকারী। গর্ভাবস্থায় বেশিরভাগ মায়েরই রক্তশূন্যতা এবং আয়রনের ঘাটতি দেখা দেয় তাই এ সকল আয়রনের ঘাটতি এবং রক্তশূন্যতা থেকে প্রসূতি মায়েদের রক্ষা করার জন্য কামরাঙ্গা খাওয়া জরুরি। গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হওয়ার ফলে গর্ভবতী মায়েদের হিমোগ্লোবিন কমে যায় তাই এ সময় রক্ত বৃদ্ধির জন্য যে সকল ফল খাওয়া উচিত তার মধ্যে কামরাঙ্গা অন্যতম।
হজম শক্তি বৃদ্ধিতে
গর্ভবতী মহিলাদের হজম শক্তি ঠিক রাখার জন্য যে সকল খাবার খাওয়া উচিত তার মধ্যে কামরাঙ্গা একটি। হজম শক্তি উন্নত করার জন্য কামরাঙ্গা খাওয়া প্রয়োজন। গর্ভাবস্থায় যেহেতু মহিলাদের পেট অনেক বড় থাকে তাই যে কোন খাবার দ্রুত হজম হওয়া অত্যন্ত জরুরি তাই এ সময় যে ধরনের খাবার খেলে হজম শক্তি উন্নত হবে সে ধরনের খাবার খাওয়া উচিত।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে
গর্ভাবস্থায় মহিলাদের অতিরিক্ত টয়লেট যাওয়া খুব একটা ভালো নয় তাই এ সময় যদি মহিলাদের কোষ্ঠকাঠিন্য হয় তাহলে বিপদ হতে পারে। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে কামরাঙ্গা খাওয়াটা অত্যন্ত জরুরি। গর্ভাবস্থায় যেকোনো ধরনের ফল খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
ক্যালরির পরিমাণ কম
গর্ভাবস্থায় ক্যালোরি কম যুক্ত ফল খাওয়া উচিত সে হিসেবে কামরাঙ্গায় ক্যালরি কম থাকার ফলে এটি খেলে গর্ভবতী মায়েদের খুব একটা সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। কামরাঙ্গায় ক্যালরি কম থাকার ফলে এটি গরবস্থায়ী মায়েদের জন্য ভালো।
আরো পড়ুনঃ ফুলকপির উপকারিতা,পুষ্টিগুণ ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত
পুষ্টির ঘাটতি পূরণ
পুষ্টির ঘাটটি পূরণের জন্য গর্ভাবস্থায় মহিলারা অনেক কিছু খেয়ে থাকে। পুষ্টিকর খাবার হিসেবে কামরাঙ্গা ও খুবই উপযুক্ত একটি ফল। তাই গর্ভাবস্থায় মহিলাদের পুষ্টি বাড়ানোর জন্য কামরাঙ্গা খাওয়া জরুরি। এতে গর্ভবতী মায়ের শরীরের জন্য যেমন উপকার তেমনি অনাগত বাচ্চার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কোষের সুরক্ষায়
কামরাঙ্গা গর্ভাবস্থায় খাওয়ার ফলে মায়ের এবং শিশুর কোষের সুরক্ষা করে থাকে। যেহেতু কামরাঙ্গা একটি এন্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত ফল সেহেতু গর্ভবতী মায়ের শরীরে এটি ক্ষতিকারক বিভিন্ন দিক থেকে রক্ষা করে থাকে।
গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা কিভাবে খাওয়া যায়
গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা কিভাবে খাওয়া যায় এই সম্পর্কে অনেক গর্ভবতী মায়েরা জানেন না। কামরাঙ্গা যেহেতু সুস্বাদু এবং টক জাতীয় ফল তাই গর্ভাবস্থায় এ ফল খেতে অনেক ভালো লাগে কারণ এ সময় গর্ভবতী মা টক জিনিস বেশি পছন্দ করেন। চলুন কিভাবে গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খাওয়া যায় আমরা কিছু পয়েন্ট আলোচনা করি।
কাঁচা খাওয়াঃ কামরাঙ্গা খাওয়ার আগে সর্ব প্রথমে ভালোভাবে পানি দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর এর চারপাশের শিরা গুলো কেটে নিতে হবে তারপর গোল গোল অথবা চাকা চাকা করে কেটে এতে সামান্য লবণ ছিটিয়ে খেতে পারেন। কামরাঙ্গার খোসা যেহেতু খুব একটা মোটা নয় পাতলা খোসা তাই এটি খোসা সহ খাওয়া যায়।
জুস বানিয়েঃ এছাড়াও গর্ভাবস্থায় যদি কাঁচা না খেতে পারেন তাহলে এটি ব্লেন্ড করে জুস বানিয়ে খেতে পারেন। কারণ কামড়ে খাওয়া যদি না ভালো লাগে তাহলে জুস বানিয়ে সামান্য বিট লবণ মিশিয়ে খেতে পারেন। এছাড়াও এক চা চামচের মতো চিনি অথবা মধু যুক্ত করে খেতে পারেন।
জ্যাম বা চাটনি বানিয়েঃ কামরাঙ্গা দিয়ে খুব সহজেই চাটনি বানানো যায়। কামরাঙ্গা দিয়ে খুব ভালোভাবে টক মিষ্টি ঝাল চাটনি বানিয়ে এটি ভাতের সঙ্গে অথবা রুটির সঙ্গে স্বাদ করে খেতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ কিভাবে পেটের চর্বি কমানো যায় সহজ ১০ টি উপায়
সালাদ বানিয়েঃ গর্ভাবস্থায় অনেক সুস্বাদু ফল খেতে ইচ্ছে করেনা তাই আপনি এটিকে বিভিন্ন ধরনের রেসিপি বানিয়ে খেতে পারেন। তাই যারা কামরাঙ্গা কাঁচা খেতে পারেন না তারা এটিকে সুন্দরভাবে সালাত বানিয়ে খেতে পারেন। যেভাবেই খান গরবস্থায়ী কামরাঙ্গা খেলে অবশ্যই এর উপকারিতা রয়েছে।
গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ওজন কমাতে কামরাঙ্গা
গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ওজন কমাতে কামরাঙ্গা খাওয়াটা জরুরী। গর্ভাবস্থায়ী এমনিতেই প্রসূতি মায়েদের ওজন বৃদ্ধি পায় সেহেতু তারা বুঝে উঠতে পারে না এ সময় কি খেলে তাদের শরীরে স্বস্তি বোধ করবে। তাই যারা এ সকল সমস্যায় ভুগছেন তারা গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খেতে পারেন। কারণ যেহেতু এটি একটি টক সুস্বাদু এবং ভিটামিন সি যুক্ত ফল তাই এটি খেলে অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি কমাতে সাহায্য করবে।
আশ যুক্ত যে কোন ফল অথবা সবজি গর্ভাবস্থায় অথবা এমনিতেই প্রত্যেক মানুষের জন্য উপকারী। কারণ আশ যুক্ত ফলে ফাইবার থাকার ফলে এটি দ্রুত ওজন বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। কারণ ভিটামিন সি যুক্ত ফলে চিনির পরিমাণ এবং ফ্যাট কম থাকায় শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে। তাই গর্ভাবস্থায় শরীরের ওজন ঠিক রাখতে অবশ্যই কামরাঙ্গা খাওয়া প্রয়োজন।
তবে কামরাঙ্গা সারা বছর পাওয়া নাও যেতে পারে। কিন্তু বর্তমান সময়ে এমন একটি সময় চলছে যে সিজন ছাড়াই যেকোনো ফল এখন হাতের কাছে পাওয়া যায়। তবে গ্রামের চাইতে শহরের দিকে সব ধরনের ফল এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাওয়া যায়। যদিও দাম তুলনামূলক বেশি হয় তবে প্রয়োজনে আপনি সবই পাবেন। তাই গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা মজুদ করে রেখে খেতে পারেন।
গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা কি খাওয়া উচিত
গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা কি খাওয়া উচিত এ সম্পর্কে অনেক গর্ভবতী মায়েদেরই চিন্তা ভাবনা থাকে। তবে যারা এ ধরনের চিন্তা করে থাকেন তারা আজকের এ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। কামরাঙ্গা একটি পুষ্টিকর খাবার খাবার হলেও গর্ভাবস্থায় অনেক কিছুই নিয়ম মেনে খেতে হয়। তাছাড়া শরীরের উপর নির্ভর করে আপনি গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা সহ্য করতে পারবেন কিনা।
আরো পড়ুনঃ ব্রকলি খাওয়ার নিয়ম, পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত
কামরাঙ্গা খাওয়ার আগে কিছু বিষয় মাথায় রেখে তারপরে খাওয়া উচিত। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খাওয়ার আগে অবশ্যই ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তারপরে খেতে পারেন। কারণ তারাই ভালোভাবে বলতে পারবেন গর্ভাবস্থায় কোন খাবারটা গর্ভবতী মায়ের জন্য ভালো। তবে কামরাঙাতে যেহেতু ভিটামিন সি ,ফাইবার, এবং পটাশিয়াম রয়েছে তাই এটি গর্ভবতী মায়ের জন্য উপযুক্ত বলা যায়।
ফাইবার থাকার ফলে কামরাঙ্গা কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত সমস্যা থেকে মুক্তি দেই তাই গর্ভাবস্থায় এ ধরনের সমস্যা থেকে রেহাই পেতে কামরাঙ্গা খেতে পারেন। কারণ এ যাবৎ পর্যন্ত কোন চিকিৎসক ফলমূল খাওয়ার ক্ষেত্রে কখনো নিষেধ করেন না। যাদের শারীরিক কিছু সমস্যা থাকে তাদের ক্ষেত্রে আলাদা। যে সকল গর্ভবতী মায়ের কামরাঙ্গা খেলে কোন সমস্যা বোধ করেন না তারা খেতে পারেন।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য অনেক গর্ভবতী মা বিভিন্ন ধরনের খাবার খেয়ে থাকেন কিন্তু তারা বুঝতে পারেন না কোন ধরনের খাবার খেলে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও গর্ব অবস্থায় বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। তাই এ সকল সমস্যা জনিত সমাধানে আপনি কামরাঙ্গা খেতে পারেন। কামরাঙ্গা খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক অংশে বৃদ্ধি পাবে।
এছাড়াও কামরাঙ্গাতে আন্টি- অক্সিডেন্ট এবং ফাইবার থাকার ফলে এটি দ্রুত হজমে সহায়তা করে এছাড়াও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। অনেক গর্ভবতী মায়েরা ভিটামিন সি এর অভাবে ভোগেন। সে সকল গর্ভবতী মায়েদের জন্য কামরাঙ্গা খুবই উপকারী একটি ফল। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। গর্ভাবস্থায় ভিটামিন সি যুক্ত ফল খাওয়া অত্যন্ত জরুরি।
কামরাঙ্গার পুষ্টিগুণ ও শিশুর বিকাশে ভূমিকা
কামরাঙ্গার পোস্টটি কোন শিশুর বিকাশে ভূমিকা পালনে গুরুত্ব অনেক। গর্ভাবস্থায় মায়ের পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের ফলে শিশুর মানসিক এবং শারীরিক বিকাশ বৃদ্ধি পায়। তাই গর্ভাবস্থায় পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ভিটামিন সিঃ কামরাঙ্গায় উচ্চমাত্রায় ভিটামিন সি থাকায় এটি শিশুর উষ্ণায়ন তন্ত্রের উন্নতি করতে সহযোগিতা করে। এছাড়াও শিশুর বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। গর্ভবতী মহিলাদের ফ্রি-রেডিক্যাল রোধ করতে কামরাঙ্গা খুবই উপকারী।
পটাশিয়ামঃ কামরাঙ্গাতে পটাশিয়াম থাকার ফলে এটি শিশুর হৃতপিণ্ড পেশির গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারণ শিশু মায়ের পেটে থাকা অবস্থায় এর বিভিন্ন ধরনের ঘাটতি থাকতে পারে তাই এ সময় যে সকল খাবার খেলে শিশুর জন্য ভালো সে ধরনের খাবার খাওয়া উচিত।
আরো পড়ুনঃ সকালে কলা খাওয়ার উপকারিতা ও এর ১০ টি পুষ্টিগুণ সম্পর্কে
ম্যাগনেসিয়ামঃ ম্যাগনেসিয়াম মানুষের হাড় শক্তিশালী এবং গঠনের সহায়তা করে। গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খেলে ম্যাগনেসিয়ামের ফলে শিশুর হাড় শক্ত এবং স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টঃ কামরাঙ্গাতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মায়ের গর্ভস্থ শিশুর কোষকে সুরক্ষিত রাখে। এছাড়াও গর্ভবতী মায়ের এবং তার অনাগত শিশুর টিস্যুর ক্ষতির সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ফাইবারঃ কামরাঙ্গাতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকার ফলে গর্ভবতী মায়ের খাবার হজমে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গর্ভ অবস্থায় গর্ভবতী মায়ের খাবার হজম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কামরাঙ্গাতে থাকা ফাইবার প্রসূতি মায়ের হজম প্রক্রিয়ার উন্নত করার ফলে শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি ঘটাতে সাহায্য করে।
গর্ভাবস্থায় কি পরিমাণ কামরাঙ্গা খাওয়া উচিত
গর্ভাবস্থায় কি পরিমান কামরাঙ্গা খাওয়া উচিত এ সম্পর্কে অবশ্যই প্রত্যেক গর্ভবতী মায়ের জানা অত্যন্ত জরুরী। গর্ভাবস্থায় মেয়েদের খুবই টার্নিং একটি সময় তাই এ সময় অনেক কিছু নিয়ম অনুযায়ী খেতে হয়। চলুন করা অবস্থায় কি পরিমান কামরাঙ্গা খাওয়া উচিত এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করি।
গর্ভাবস্থায় মহিলাদের অতিরিক্ত কামরাঙ্গা খাওয়া উচিত নয় কারণ এটি যেহেতু ভিটামিন সি যুক্ত ফল অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে গ্যাসের সমস্যা বা বুক জ্বালাপোড়া হতে পারে। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন কামরাঙ্গা খেতে পারেন। আপনি যদি প্রতিদিন খেতে চান তাহলে মাঝারি সাইজের একটি কামরাঙ্গা খেতে পারেন। যার ওজন হতে হবে ১০০ থেকে ১৫০ গ্রাম।
গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খাওয়ার আগে অবশ্যই এটি ধুয়ে পরিষ্কার করে খাবেন। তাছাড়া এটি খোসাসহ কাঁচা খাওয়া সবচাইতে বেশি উপকার। প্রতিদিন খেতে চাইলে একটি ছোট সাইজের কামরাঙ্গা খেতে পারেন। তবে আপনি চাইলে এর চাইতে বেশি খেতে পারেন এটা আপনার শরীরের উপর নির্ভর করবে। আপনার হজম শক্তি যদি ভালো থাকে তাহলে আপনি অবশ্যই ২টি কামরাঙ্গা খেতে পারেন।
গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খাওয়ায় কিছু সর্তকতা
গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খাওয়ায় কিছু সতর্কতা অবশ্যই পালন করতে হবে। কারণ এ অবস্থায় পরিমাণে অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এ সময় নিজেকে অনেক কিছু খাওয়া থেকে নিজেকে কন্ট্রোল রাখতে হবে। তাছাড়া শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। কামরাঙ্গায় অক্সালেট থাকাই এটি বেশি খাওয়ার ফলে গর্ভবতী মায়ের কিডনির উপর প্রেসার পড়তে পারে।
তাই প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত কামরাঙ্গা খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। যদি গর্ভবতী মায়েদের কিডনির সমস্যা না থাকে তারপরও এটি পরিমিত পরিমাণে খাওয়া ভালো। গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত কামরাঙ্গা খেলে শরীরে খিচুনি, বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরা, অস্বস্তি বোধ হতে পারে। তবে যাদের এলার্জিজনিত সমস্যা আছে তাদের এলার্জি অনেকাংশে বৃদ্ধি পেতে পারে অতিরিক্ত কামরাঙ্গা খাওয়ার ফলে।
তাছাড়া এটি অতিরিক্ত খাবার ফলে পেটে ব্যথা হতে পারে তাই ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তারপরে আপনি খেতে পারেন। কারণ গর্ভাবস্থায় মেয়েদের শরীর স্বাভাবিক এর চেয়ে কিছুটা পরিবর্তন আসে তাই এ সময় অনেক কিছু নিয়ম মেনেই খাওয়া উচিত। প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত খেলে এটি শিশুর বিকাশেও ব্যাঘাত করতে পারে এবং শিশুর বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।
শেষ কথাঃ গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খাওয়ার উপকারিতা
অবশেষে আমরা বলতে পারি গর্ভা অবস্থায় কামরাঙ্গা খাওয়া যেতে পারে তবে এটি নিয়ম মেনে এবং শরীরের অবস্থা বিবেচনা করে খাওয়া উচিত। কারণ প্রসূতি মায়েরা অনেক কিছু এ সময় সহ্য করতে পারে না তাই আপনি যে জিনিস খেলে আপনার শরীর স্বস্তিবোধ হবে সেটা আপনি খাবেন। তারপরও কামরাঙ্গা যেহেতু ভিটামিন সি ফল তাই এটি করা অবস্থায় খেতে পারে না।
কামরাঙ্গাতে যেত ফাইবার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পটাশিয়াম ভিটামিন সি ইত্যাদি রয়েছে তাই এটি শরীরের জন্য ভালো। গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খেতে হলে পরিমাণে অল্প খাবেন যেন বাড়তি কোন সমস্যা না হয়। আজকের পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে এ ধরনের আরো পোস্ট আমাদের ওয়েবসাইটে আছে তাই আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করলে হয়তো আপনি আপনার কাঙ্খিত পোস্টটি পেতে পারেন ধন্যবাদ।
টেকিসময় ডট কম ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url