কলার খোসা দিয়ে কিভাবে রূপচর্চা করা যায়
কলার খোসা দিয়ে কিভাবে রূপচর্চা করা যায় এটা শুনে হয়তো অনেকেই পড়ে। অবাক হবেন কিন্তু প্রাকৃতিকভাবে ত্বকের যত্ন নেওয়ার কথা চিন্তা করলে কলার খোসা দিয়ে খুব সুন্দর ভাবে রূপচর্চা করা যায়।
সূচিপত্রঃ কলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা
- কলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা
- চুলের যত্নে কলার খোসা
- দাঁতের যত্নে কলার খোসা
- হাত পায়ের যত্নে গলার খোসা
- অন্যান্য ব্যবহারে কলার খোসা
- কলার খোসা ত্বকে ব্যবহারে কিছু সতর্কতা
- শেষ কথাঃ কলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা
কলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা
কলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা করা যায় খুব সহজেই। কলা যেহেতু সারা বছরই পাওয়া যায় তাই খুব সহজেই এর খোসা সংগ্রহ করা যায় ফলে এর খোসা দিয়ে রূপচর্চা করা যায়।
ব্রনের দাগ হ্রাস করতে
ব্রণের দাগ হ্রাস করতে কলার খোসা খুবই উপকারী একটি উপাদান। কারণ বর্তমানে মেয়ে অথবা ছেলের মুখেই বিভিন্ন কসমেটিক্স ব্যবহারের ফলে মুখে দাগ হয়ে থাকে। তাছাড়া এলার্জিজনিত সমস্যার কারণে মুখে বিভিন্ন ধরনের ব্রণ বা পিম্পল দেখা যায় এবং সেগুলো ভালো হয়ে যাওয়ার পর সে দাগটা থেকে যায় এ সকল দাগ দূর করতে কলার খোসা খুবই কার্যকরী একটি উপাদান।
আরো পড়ুনঃ প্রতিদিন কয়টা আমলকি খাওয়া উচিত
আপনি যদি কলার খোসা দিয়ে খুব সহজে ব্রনের দাগ দূর করতে চান তাহলে কলার খোসা ভিতরের অংশ আলতো করে ব্রণের উপরে মেসেজ করতে থাকুন । আজ থেকে দশ মিনিট মেসেজ করার পর কিছুক্ষণ লাগিয়ে রাখুন তারপরে পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। এরকম ভাবে প্রায় ২০ থেকে ৩০ দিনের মতো নিয়মিত করতে থাকুন আস্তে আস্তে প্রাণের দাগ কমে যাবে।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে কলার খোসার ভিতরে অংশ দিয়ে প্রতিদিন মেসেজ করুন অথবা গলাতে কালো দাগ থাকলে সেগুলোতে ভালোভাবে মেসেজ করুন এরপর 20 মিনিট পর ভালোভাবে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ফলে আপনার ত্বক অনেক মসৃণ, নরম এবং উজ্জ্বল দেখাবে।
বয়সের ছাপ দূর করতে
বয়সের ছাপ দূর করতে কলার খোসা খুবই কার্যকরী একটি উপাদান। যখন বয়স বৃদ্ধি পায় তখন বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে ত্বকের উজ্জ্বলতা কমতে থাকে এবং এক ধরনের বয়সের ছাপ দেখা যায়। এ সকল বয়সের ছাপ দূর করতে কলার খোসা খুবই ভালো কাজ করে কলার খোসা নিয়মিত ত্বকে ব্যবহার করলে ত্বক টান টান এবং উজ্জ্বল দেখাবে।
ডার্ক সার্কেল কমাতে
কলার খোসার ভেতরের অংশ সামান্য মধু এবং অ্যালোভেরা জেল নিয়ে চোখের নিচে ভালোভাবে লাগিয়ে রাখার পর ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এর ফলে চোখের নিচের কালো দাগ দূর করার যায়।
ত্বকের ভাঁজ দূর করতে
অনেকের ত্বক রুক্ষ এবং ড্রাই হয়ে থাকে ফলে কম বয়সেই মুখে বয়সে চাপ পড়ে যায় তাই যাদের এবং ড্রাইভ এ সকল তাকে কলার খোসা এবং এক চামচ মধু এবং কয়েক ফোঁটা লেবু মিশিয়ে ম্যাসাজ করে নিতে পারেন এবং ১৫ থেকে ২০ মিনিট রাখার পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এ এরকমভাবে নিয়মিত করতে থাকুন দেখবেন ত্বকের ভাঁজ, বয়সের ছাপ ইত্যাদি সকল কিছু দূর হয়ে যাবে।
চুলের যত্নে কলার খোসা
চুলের যত্নে কলার খোসা হতে পারে একটি অমূল্য সমাধান। ত্বকের যত্ন নিতে সকলে যেমন পছন্দ করে তেমনি চুলের যত্ন নিয়ে ও অনেকে চিন্তিত থাকে। কারণ ত্বকের জন্য যেভাবে নেওয়া হয় চুলের যত্ন কিন্তু সেরকম ভাবে নেওয়া হয় না। তাই ঘরোয়া ভাবে কলার খোসা দিয়ে চুলের যত্ন করা যাবে নিমিষেই।
কয়েকটা কলার খোসা, মেহেদি পাতা, এলোভেরা জেল, লেবু ইত্যাদি একসঙ্গে নিয়ে ব্লেন্ডারে পেস্ট বানিয়ে চুলের গোড়ায় এবং সম্পূর্ণ চলে ভালোভাবে মাখিয়ে দিন। এরপর ২০ থেকে ৩০ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে ঠান্ডা পানি দিয়ে চুল পরিষ্কার করে ফেলুন পরবর্তীতে এটি চুলকে মসৃণ এবং সিল্কি করতে সাহায্য করবে।
দাঁতের যত্নে কলার খোসা
দাঁতের যত্নে গলার খোসার কোন তুলনা হয় না। যাদের দাঁতে ক্যাভিটি বা প্লাগ পড়ে গেছে , লাল হয়ে গেছে হঠাৎ যারা সিগারেট, পান ইত্যাদি খেয়ে থাকে তাদের দাঁতে বিশেষ করে লাল দাগ পড়ে যায় সে সকল দাগ দূর করতে কলার খোসা ব্যবহার করা যেতে পারে। কলা খোসার ভেতরের অংশ দিয়ে দাঁত ভালো করে ঘুষুন এবং এভাবে নিয়মিত করতে থাকুন আস্তে আস্তে দাঁতের সকল ধরনের দাগ দূর হয়ে যাবে।
আরো পড়ুনঃ সকালে কলা খাওয়ার উপকারিতা ও এর ১০ টি পুষ্টিগুণ সম্পর্কে
প্রতিদিন নিয়মিত কলার খোসা দিয়ে দাঁত দুই থেকে তিন মিনিট মেসেজ করুন তারপর টুথব্রাশ দিয়ে ব্রাশ করে ভালোভাবে কুলি করে ধুয়ে ফেলুন এর ফলে আপনার দাম চকচকে এবং উজ্জ্বল দেখাবে।
হাত পায়ের যত্নে কলার খোসা
হাত পায়ের যত্নে কলার খোসা ব্যবহার করা যেতে পারে। বিশেষ করে শীতকালে আমাদের হাত-পা শুষ্ক হয়ে যায় অনেকাংশে ফেটে যায়। শীতকালে যদি কলার খোসা দিয়ে আপনি আপনার হাত-পা পরিষ্কার করতে চান তাহলে এ সকল পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। প্রথমত আপনার হাত এবং পা হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নেবেন অথবা ভিজিয়ে নেবেন।
তারপরে কলার খোসার ভিতরের অংশ হাতে ভালোভাবে মেসেজ করুন তবে কলার খোসার সাথে হালকা মধু মাখে নিলে আপনার হাতের ত্বক নরম এবং মসৃণ হবে। আর পায়ের তালু তে কলার খোসা ভেতরে অংশ ভালোভাবে ঘোষণা এবং ১০ থেকে ১৫ মিনিট এভাবে রেখে দেওয়ার পর হালকা কুসুম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ফলে পায়ের ফাটা অনেক ক্ষেত্রে কমে যাবে।
অন্যান্য ব্যবহারে কলার খোসা
অন্যান্য বিভিন্ন কাজে কলার খোসা ব্যবহার করা যায় যেমন কুকুরের ত্বক ও চুলের যত্ন নেয়ার ক্ষেত্রে কলার পাশা ব্যবহার করা হয় কুকুরের ত্বকে কলার খোসা ঘষলে এদের চুল চকচকে দেখায়।
বিভিন্ন ধরনের নিরোধক পোকামাকড় দূর করার ব্যবহার করা হয়। যে সকল জায়গায় পিপড়া তেলাপোকা ইত্যাদি পোকামাকড় দেখা যায় সেখানে কলার খোসা রেখে দিলে সে সফল পোকামাকড়, কীটপতঙ্গ দূরে সরে যায়।
মশা কামড়ালে ওই কামড়ানোর স্থানে অনেক সময় জ্বলে সেখানে কলার কষা লাগিয়ে কিছুক্ষণ ধরে রাখলে সেই জ্বালাপোড়া দূর হয়ে যায়।
কলার খোসা ত্বকে ব্যবহারে কিছু সতর্কতা
কলার খোসা ত্বকে লাগানোর আগে অবশ্যই কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যেমন কলার খোসা ত্বকে লাগানোর আগে অবশ্যই ভালো করে ধুয়ে নিবেন যেন এর ভেতরে কোন রাসায়নিক উপাদান না থাকে। কারণ বেশিরভাগ কলা কার্বোহাইড্রেট দিয়ে পাকানো হয়। সতেজ এবং তাজা কলার খোসা ত্বকে ব্যবহার করা ভালো।
কলার খোসা মুখের ত্বকে ব্যবহার করার আগে হাতে বা অন্য কোন অংশে লাগান কারণ অনেক ক্ষেত্রে ত্বকে লাগালে ত্বকে এলার্জির মত ছোট ছোট দাগ হতে পারে এবং চুলকাতে পারে। কারণ এলার্জি হয় কিনা এটা পরীক্ষা করে তারপরে ত্বকে লাগাবেন।
শেষ কথাঃ কলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা
কলার ঘষা দিয়ে কিভাবে রূপচর্চা করা যায় অবশ্যই আপনারা জানতে পেরেছেন তবে যেহেতু এটা প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া যায় এবং এর ব্যবহার সম্পর্কে অনেকেরই অজানা তাই আপনাদের সাথে আজকে কলার খোঁজার দিয়ে কিভাবে রূপচর্চা করা যায় এগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো এ সকল পতিতা অবলম্বন করি আপনারা কলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা করতে পারেন।
অবশেষে আমরা বলতে পারি কলার খোসা একটি অনবদ্য উপাদান যা আমরা খুব কম খরচে সহজেই আমরা ত্বকের যত্ন নিতে পারি। এটি মুখের ত্বক থেকে হাত-পা শরীরের বিভিন্ন অংশের যত্ন নেওয়া যায় তাই কলার খোসা দিয়ে আপনারা ত্বক, দাঁত, চুল বিভিন্ন ধরনের যত্ন নিতে পারেন পোস্টটি ভাল লেগে থাকলে কমেন্টে জানাবেন ধন্যবাদ।
টেকিসময় ডট কম ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url