ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা-এই ফল খাওয়ার নিয়ম
ড্রাগন ফলের নাম ড্রাগন কেন বলা হয়েছে আসলে এটা ড্রাগনের মতো দেখতে তাই ড্রাগন ফল বলা হয়। এটি ফনিমনসা জাতীয় একটি ফল। এই ফলটা আগে বিদেশে চাষ হতো কিন্তু বাংলাদেশে এখন এর বহুল পরিচিতি রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এখন এই ড্রাগন ফল চাষ হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম Hylocereus Undatus.
এর সূচিপত্রে যা যা থাকছে :
- কত ধরনের হয়ে থাকে
- ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম
- বাজার দর কেমন হয়ে থাকে
- এই ফলের উপকারিতা
- ড্রাগন ফলের অন্যান্য উপকারিতা সমূহ
কত ধরনের হয়ে থাকে
ড্রাগন ফল মূলত দুই ধরনের দেখে থাকে সাদা ড্রাগন ও লাল ড্রাগন। সাদা ড্রাগনের ভিতর সাদা এবং কালো বীজ যুক্ত এবং সাদা ড্রাগনের ভিতর সাদা এবং কালো বীজ যুক্ত। সাদা ড্রাগনের প্রতি 100 গ্রাম ড্রাগনের ৬০ গ্রাম ক্যালোরি। আর লাল রাবণে প্রতি 100 গ্রামে ৫০ থেকে ৬০ গ্রাম ক্যালোরি। এই ফলে রস অনেক। বয়স্ক লোকজনের জন্য এই ফল খুব উপকারী।
ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম
ফলটি মাঝ বরাবর কেটে নিয়ে এর খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে। তারপরে ভিতরে যে নরম অংশটুকু আপনার ইচ্ছামত বা পছন্দ মত টুকরা করে প্লেটে পরিবেশন করতে পারেন। তাছাড়া আপনি চাইলে এটাকে জুস করেও খেতে পারেন। প্রতিদিনের খাওয়ার তালিকায় ড্রাগন ফলটা রাখা ভালো। শিশুদের জন্য খুব উপকারী ড্রাগন ফল।
বাজার দর কেমন হয়ে থাকে
যেহেতু এটা বিদেশি ফল বা খুব কম চাষ হয় তাই এর দামটাও একটু বেশি। তবে বাংলাদেশে এখন পর্যাপ্ত পরিমাণে ড্রাগন ফল চাষ হয়। যেহেতু এই ফলটার গ্রীষ্মকালীন সেহেতু সেই সিজ্নে বেশি পাওয়া যাবে। তবে আগে তুলনায় দাম এখন অনেকটাই কম। দুই বছর আগে এর দাম প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা ছিল বর্তমানে এর দাম ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় পাওয়া যায়। তবে অনেক জায়গায় 200 টাকা কেজি দরে ও বিক্রয় করতে দেখা যায়। যেহেতু এই ফল এখন সব জায়গায় এভেইলেবল তাই এর দাম একটু কমেছে। সব ধরনের পেশার মানুষ এখন খেতে পারে।
ফলের উপকারিতা
এই ফলের উপকারিতা অনেক। আমাদের দেশে লাল ড্রাগন বেশি দেখা যায়। এই ফল দেখতে যেমন সুন্দর খেতেও তেমন সুস্বাদু। এই ফলটা রসে পরিপূর্ণ তাই খেতে অনেক ভালো লাগে। বাজার থেকে ক্রয় করার পরে কিছুক্ষন ফ্রিজে রেখে খেলে এর স্বাদ একটু বেশি মনে হয়।
ড্রাগন ফল খেলে রোগ প্রতিরোধ বৃদ্ধি পায়। যারা হাড় ব্যথা জনিত রোগে ভুগছেন তাদের জন্য এই ফল খুবই উপকারী। খাদ্য হজমে এই ফল অনেক সহায়তা করে। হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সহায়তা করে। শারীরিক দুর্বলতা রোধ করে।
ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। ক্যান্সারের সকল অস্বাভাবিক কোষগুলোকে ধ্বংস করে। এভাবে 90% অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে। তাছাড়া আরও রয়েছে ফ্লাভনয়েড, ফ্যানোলিক এসিড।
ড্রাগন ফলে অনেক পুষ্টিগুণ আছে তবে বিশেষ করে আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফাইবা্ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি ইত্যাদি। পুষ্টির চাহিদা পূরণের সাথে সাথে এটি শরীর সুস্থ রাখে। কার্বোহাইড্রেট রয়েছে ২০ গ্রাম। প্রোটিন রয়েছে ১.৫ গ্রাম।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে এই ফল খুবই উপকারী। এই ফলে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে ইনসুলিন এর পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। যাদের ডায়াবেটিস ১৫ এর মধ্যে তাদের এই ফল নিয়মিত খাওয়া উচিত।
যেহেতু ড্রাগনের প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে যা হজম শক্তিতে সহায়তা করে। তাছাড়া আমাদের খাবার হজম না হলে আমাদের শরীরে অস্বস্তি লাগে তাই খাবারের পর একটু হলেও এই ফল খাওয়া উচিত আমাদের হজম শক্তি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে।
ড্রাগন ফলে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন ভেঙে ভিটামিন এ তে পরিণত হয় আর ভিটামিন এ আমাদের চোখের জন্য খুব উপকারী । চোখের জ্যোতি বাড়ানোর জন্য ভিটামিন এ খাওয়া আমাদের অত্যন্ত জরুরী আর যেহেতু ড্রাগন ফলে ভিটামিন এ পাওয়া যায় তাই আমাদের খাওয়া উচিত। এছাড়াও রয়েছে লুটেইন, জিক্সসানথিং যার চোখের লেন্স ভালো রাখতে সহায়তা করে।
মানুষের শরীরের যে অপর্যাপ্ত চর্বি জমা হয়ে থাকে সেই চর্বি কমাতে ড্রাগন ফলের উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। মেদ বা চর্বি জমে গেলে এই ড্রাগন ফলের দ্বারা মেদ কমানো যায় অর্থাৎ খাবার তালিকায় ড্রাগন ফল থাকা উচিত। যারা নিজের শরীর স্লিম অথবা সুন্দর করতে চান তারা এই ফল অবশ্যই খাবার তালিকা রাখবেন।
ড্রাগন ফলের অন্যান্য উপকারিতা সমূহ
আরো যে সব উপকারিতা আছে সেগুলোর নিচে লিস্ট আকারে দেয়া হলো। যেমন
- বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
- হিমোগ্লোবিন বাড়ায়
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
- বার্ধক্য জনিত সমস্যা দূর করে
- চুলের সমস্যা সমাধান করে
- হার্ট ভালো রাখে
- মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে
- উচ্চশক্তি সম্পন্ন কার্বোহাইড্রেট বিদ্যামান
- শিশুর স্বাভাবিক বিকাশে সহায়তা করে
- গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করে
- ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সহায়তা করে
শেষ কথা
আশা করি এই পোস্টে আপনারা ড্রাগনের উপকারিতা এবং ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে দিবেন এবং কমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ সকলকে পোস্টটি করার জন্য।
টেকিসময় ডট কম ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url