পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কিত বিষয়ে জেনে নিন
পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে এই ব্লগে আপনাদের বিস্তারিত জানাবো যদি আপনারা জানতে চান পেয়ারা খেলে কি কি উপকার হয় বা পেয়ারা কি ধরনের ফল তাহলে আজকের এই পোস্টটি বিস্তারিত পড়ে নিন।
পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকার কারণে পেয়ারার উপকারিতা অপরিসীম। আমরা জানি ভিটামিন সি এর অভাবে আমাদের ঘন ঘন ঠান্ডা লাগে, জ্বর হয় পেয়ারা খেলে ভিটামিন সির অভাব পূর্ণ হয়। চলুন পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা গুলো জেনে নি।
সুচিপত্রঃপেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কি
- নিয়মিত পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা
- কাঁচা পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা
- যে সকল রোগ প্রতিরোধে পেয়ারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে
- পেয়ারা খাওয়ার অপকারিতা
- শেষ কথা: পেয়ারার উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কিত
নিয়মিত পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা
পেয়ারাতে ভিটামিন সি ছাড়াও, ভিটামিন বি, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, আয়রন রয়েছে। যাদের ঘনঘন জ্বর কিংবা সর্দি কাশি লেগে আছে তাদের অবশ্যই প্রতিদিন পেয়ারা খাওয়া উচিত। যাদের বিভিন্ন কারণে মুখের দুর্গন্ধ থাকে পেয়ারা খাওয়ার ফলে সেই দুর্গন্ধ দূর হয়ে যায়।প্রেগনেন্ট মহিলাদের জন্য পেয়ারা খুবই উপকারী।
পেয়ারা তে ফলিক এসিড ও থাকে। পেয়ারা যেহেতু একটা সুস্বাদু ফল সেতু প্রতিদিনের খাবার তালিকায় পেয়ারা রাখাটা আবশ্যক। পেয়ারা খাওয়ার ফলে দাঁতের গোড়া শক্ত হয়। বাচ্চারা পেয়ারা খেলে মুখের রুচি বাড়ে। ১০০ গ্রাম পেয়ারায় প্রায় ৩০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি থাকে। আমাদের হয়তো প্রশ্ন জাগতে পারে পেয়ারা তো টক নয় তাহলে ভিটামিন সি কিভাবে থাকে?
কাঁচা পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা
পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকায় পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা অনেক। বিশেষ করে কাঁচা পেড়াতে প্রচুর পরমাণু ভিটামিন সি থাকে আর ভিটামিন সি আমাদের সর্দি কাশি জ্বর বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। পেয়ারা খেলে ত্বক উজ্জ্বল দেখায়। দুপুরে খাওয়ার পরে অর্থাৎ খাওয়ার আধাঘন্টা বা এক ঘন্টা পরে পেয়ারা খেলে ভালো।
পেয়ারাতে পানির পরিমাণ বেশি থাকে ফলে ত্বক মসৃণ রাখে। পেয়ারা খাওয়ার আগে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। সবুজ কাঁচা সাথে পেয়ারা বেছে নিয়ে বিকালের নাস্তায় খাওয়া যাবে। পেয়ারা খাওয়ার আগে অল্প পরিমাণ লবণ মেখে নিলে এর সাদ দ্বিগুণ বৃদ্ধি পায়। পেয়ারার চাইতে পেয়ারার খোসায় আরো বেশি উপকার। সবুজ কাঁচা পেয়ারার চোকা খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সতেজ সুন্দর পেয়ারা বেছে নিয়ে খাওয়া উচিত। ১০০ গ্রাম পেয়ারা তে ৩৯ থেকে ৪৩ ক্যালোরি থাকে। পেয়ারাতে কিছু পরিমান সাইট্রিক এসিড ও ম্যালিক এসিড থাকে। পেয়ারার পুষ্টিগুণ বলে শেষ করা যাবে না। প্রত্যেক দিনের খাবারের তালিকায় পেয়ারা রাখাটা আমাদের জন্য খুবই জরুরী। পেয়ারাতে পটাশিয়াম থাকায় উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
যে সকল রোগ প্রতিরোধে পেয়ারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে
পেয়ারা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী ফল। বিশেষ করে বাচ্চারা পেয়ারা খুবই পছন্দ করে। প্রত্যেকের প্রতিদিন একটি মাঝারি সাইজের পেয়ারা খাওয়া উচিত। পেয়ারা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণে পেয়ারার উপকারিতা
পেয়ারা খুব তাড়াতাড়ি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে এজন্য ডায়াবেটিস রোগীদের প্রতিদিন একটা করে পেয়ারা খাওয়া জরুরী। পেয়ারাতে যেহেতু ফাইবার থাকে সেতু ডায়াবেটিস কমাতে সহায়তা করে।
দৃষ্টিশক্তি ধরে রাখতে পেয়ারার উপকারিতা
পেয়ারতে ভিটামিন এ থাকার কারণে দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখে। ভিটামিন এ রাতকানা দূর করতে সহায়তা করে চোখের দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখাতে পেয়ারা খাওয়ার কোন বিকল্প নাই।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে পেয়ারার ভূমিকা
উচ্চ রক্তচাপ আমাদের মস্তিষ্কের জন্য খুবই বিপদজনক। এ সকল বিপদজনক রোগ প্রতিরোধ থেকে রক্ষা পেতে পেয়ারা খাওয়া উচিত। বেড়াতে পটাশিয়াম থাকে সেহেতু উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। বিশেষ করে লাল পেয়ারা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ওজন কমাতে পেয়ারার উপকারিতা
ক্যান্সার প্রতিরোধে পেয়ারার উপকারিতা ক্যান্সার একটি মরণব্যাধি রোগ। যা একবার শরীরে দেখা দিলে তাকে শেষ না করা পর্যন্ত ছাড়ে না। যেহেতু পেয়ারা ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে সেহেতু পেয়ারা খাওয়ার কোন বিকল্প নাই। পেয়ারাতে লাইকোপেন এবং আন্টি অক্সিডেন্ট থাকার ফলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
ত্বক, চুল ও পেটের সমস্যা সমাধানে পেয়ারার উপকারিতা
পেয়ারাতে প্রচুর পানি থাকায় ত্বক সুন্দর রাখে। পেয়ারা খেলে চুল পড়া কমে। তাছাড়া পেয়ারা হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। পেয়ারা যেহেতু একটি ভারি ফল একটু খেলেই পেট ভরে যায়। পেয়ারাতে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল পাওয়ার থাকার কারণে বিভিন্ন ধরনের পেটের সমস্যা দূর করে। পেয়ারা খেলে পায়ের গোড়ালি ফাটা সমস্যার সমাধান হয়। পেয়ারা খেলে শরীরের শুষ্কতা কমে।
প্রতিদিন পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা
হাতের কাছে পাওয়া এবং সহজলভ্য ফল গুলোর মধ্যে পেয়ারা অন্যতম। পেয়ারার গুনাগুন কতটুকু হয়তো সবাই জানে না। পেয়ারাতে ফাইবার খুব দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করে। পেয়ারা রক্তে সুগারের পরিমাণ কমায় তাই যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা প্রতিদিন পেয়ারা খেতে পারেন। পেয়ারাতে পানির পরিমাণ বেশি থাকে। যারা ওজন কমাতে চান তারা প্রতিদিন পেয়ারা খেতে পারেন।
পেয়ারা ভালোভাবে চিবিয়ে খেলে দাঁতের মাড়ি এবং মুখের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। যাদের ব্লাড প্রেসার আছে তাদের অবশ্যই প্রতিদিন পেয়ারা অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। পেয়ারা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে। বেড়াতে সোডিয়াম পটাশিয়াম থাকার ফলে এ ধরনের সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। পেয়ারার পাতা চিবিয়ে খেলে অনেক সময় দাঁতের ব্যথা ভালো হয়।
প্রতিদিন পেয়ারা খাওয়ার ফলে চুল পড়া কমে যায়। হার্ট ভালো রাখে। একটু বেশি কাঁচা পেয়ারা খেতে যেমন কষ্ট মনে হয় তবে এ ধরনের পেয়ারা খাওয়া বেশি ভালো। পেয়ারা কাঁচা অথবা পাকা যে ধরনেরই হোক না কেন খেলে উপকার অবশ্যই আছে। পেয়ারাতে যেহেতু ভিটামিন সি আছে সেহেতু এটি দাঁত এবং মাড়ি শক্ত করে পেটের অনেক রোগ প্রতিরোধ করে।
পেয়ারা খাওয়ার অপকারিতা
পেয়ারার যেমন উপকারিতা আছে তেমন অপকারিতা ও আছে। যে কোন ফল প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাওয়া উচিত নয়। প্রতিদিন একটা মাঝারি সাইজের পেয়ারা খেলেই যথেষ্ট তবে এর অতিরিক্ত খেলে অনেক ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। পেয়ারা যেহেতু ভারি ফল সেহেতু পরিমাণ মতো খেলে কোন সমস্যা নাই।
খালি পেটে পেয়ারা খাওয়ার অপোকারিতা
খালি পেটে বা সকালে পেয়ারা খাওয়া খুব একটা ভালো না। কারণ পেয়ারা ফল সবার একই রকম ভাবে হজম হয় না। অনেক সময়ই খালি পেটে পেয়ারা খেলে পেট ব্যাথা করতে পারে। গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। গর্ভবতী মহিলাদের বিশেষ করে সকালে খালি পেটে পেয়ারা খাওয়া একদম উচিত নয়।
কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় পেয়ারা
যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা আছে তারা পেয়ারা একটু পরিমাণে কম খাবেন। যেহেতু পেয়ারাতে ফাইবার এবং পটাশিয়াম থাকে সেহেতু কোষ্ঠকাঠিন্য বেড়ে যেতে পারে কাঁচা পেয়ারা কোষ্ঠকাঠিন্য রোগীদের জন্য খুবই অনুপযোগী। ছোট হোক কিংবা বড় কোন রোগই ভালো নয়।
এলার্জি জনিত সমস্যা থাকলে
যাদের অ্যালার্জি আছে অর্থাৎ এলার্জির সমস্যায় ভুগছেন তাদের পেয়ারা থেকে সাবধান থাকতে হবে। অল্প পরিমাণ খেলে সমস্যা নাই তবে অধিক পরিমাণ খেয়ে ফেললে যদি এলার্জিদ জনিত কোন সমস্যা দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। পেয়ারা অধিক পরিমাণে খেয়ে ফেললে শারীরিক বিভিন্ন উদ্রেক দেখা দিতে পারে। শরীর চুলকাতে পারে বা ফুলে যেতে। পরিমাণটা ঠিক রেখে পেয়ারা খাওয়া উচিত।
শেষ কথা: পেয়ারার উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কিত
পেয়ারার উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে আমরা জানতে পারলাম। যেকোনো ফলের ভালো মন্দ দুইটাই আছে। তবে পরিমাণ ঠিক রেখে আমাদের খাওয়া প্রয়োজন। পেয়ারা যেহেতু একটি পুষ্টিকর ফল সেহেতু আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী এবং বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। পেয়ারা একটি দেশীয় ফল তাই এর পুষ্টিগুণ অনেক।
আশা করি উপরের আলোচনা সাপেক্ষে আপনারা পেয়ারার উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন।এ ধরনের সুস্বাস্থ্যকর ফল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানার জন্য আমাদের আরো পোস্ট আছে সেগুলো দেখতে পারেন। শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য ফল খাওয়ার কোন বিকল্প নাই।যেকোনো ফল খাওয়ার উপকারিতা আছে। তবে পেয়ার খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আজকের এই
টেকিসময় ডট কম ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url